করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যে, মৃত ১০৮
ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় একজন আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে ছড়ালো প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস।
মঙ্গলবার প্রথম কভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর কথা ঘোষণা করে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গভর্নর জিম জাস্টিস বলেন, “আমরা জানতাম এটি আসছে।”
চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ করোনাভাইরাসটিতে যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ছয় হাজার ৩৬২ জন আক্রান্ত ও ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে। দেশটির ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ১৬ জন ও ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিএনএন জানায়, মঙ্গলবার ইলিনয় অঙ্গরাজ্য করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে প্রথম মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি অঙ্গরাজ্য এ ভাইরাসজনিত মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিল।
ভাইরাস আতঙ্কে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন এক ট্রিলিয়ন ডলার মঞ্জুর করার জন্য কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশটির অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিন একান্তে রিপাবলিকান সিনেটরদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন বলে জানা গেছে।
কংগ্রেস পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার ২০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে, দলীয় সিনেটরদের তিনি এমনটি বলেছেন বলে কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ জনে দাঁড়িয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আট হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
পরিস্থিতি নাজুক হতে থাকায় শহরের ৮৫ লাখ বাসিন্দাকে বাড়িতে ‘আশ্রয় নিয়ে থাকার’ নির্দেশ দিবেন কি না, তা বিবেচনা করে দেখছেন নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র বিল দ্য ব্লাজিও। আগামী দুই দিনের মধ্যে তিনি এ বিষযে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শহরটির বাসিন্দারা মূলত তাদের বাড়িতেই আটকা পড়ে থাকবে, তবে নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা ও ওষুধ কেনার মতো জরুরি প্রয়োজনে এবং লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে কুকুর নিয়ে হাঁটা ও ব্যায়াম করার জন্য বের হতে পারবেন।
ব্লাজিও বলেছেন, “এটি অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। এর আগে আমরা কখনো এমন সিদ্ধান্ত নেইনি। নিউ ইয়র্ক শহরের ইতিহাসে এরকম কোনো কিছু কখনো হয়েছে বলে শুনিনি আমি।”
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ওই এলাকার ৬৭ লাখ বাসিন্দাকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জানিয়েছেন, অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা অনুরোধ করলে ভাইরাসের কবলিত এলকাগুলোতে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীকে ডাকতে পারে হোয়াইট হাউস।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা দুই দেশের মধ্যে প্রয়োজনীয় নয় এমন সব ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশ দুটি এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।