করোনাভাইরাস: মৃতের সংখ্যা ৩৮০০ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮২১ জন ও আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
মৃত ও আক্রান্তদের অধিকাংশই চীনের মূলভূখণ্ডের বাসিন্দা, এ দেশটিরই উহান শহরে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিনে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। তারপর থেকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও এখন চীনে নতুন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) রোববার দেশটিতে করোনাভাইরাসে নতুন আক্রান্তের ৪০টি ঘটনা ও ২২টি মৃত্যু রেকর্ড করেছে বলে সিএনএন জানিয়েছে। জানুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ঘোষণা শুরু হওয়ার পর থেকে এদিনই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম ছিল। এদের নিয়ে দেশটিতে নভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯ এ মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১১৯ জনে দাড়াঁচ্ছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৮০ হাজার ৭৩৫ জনে।
যে ৪০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৬ জনই প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহানের বাসিন্দা, আর বিদেশ থেকে ফেরাদের মধ্যে চার জনের দেহে ভাইরাসটির অস্তিত্ব শনাক্ত হয়।
এনএইচসি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৬০০ রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
চীনে কভিড-১৯ আক্রান্ত আরেকজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে, অপরদিকে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকায় উহানের বেশ কিছু অস্থায়ী হাসপাতালের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে।
চীনের পরিস্থিতি উন্নতি হলেও পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে ইতালিতে। ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় সমসংখ্যক লোক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও ইতালিতে মৃত্যু হয়েছে ৩৬৬ জনের। এরমধ্যে শুধু রোববারই মৃত্যু হয়েছে ১৩৩ জনের।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশটিতে ৭ হাজার ৩৭৫ জনের সংক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
ইউরোপের সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় এদিন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে এক কোটি ৬০ লাখ লোককে কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার ঘোষণা দেন।
উত্তরাঞ্চলীয় ১৪টি প্রদেশের ওই দেড় কোটির বেশি লোক এখন বিশেষ অনুমতি ছাড়া এলাকা ছাড়তে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ২০৬ ইউরো জরিমান গুণতে হতে পারে। এছাড়া স্কুল, জিম, জাদুঘর, নাইটক্লাবও বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
ইতালির সেনাপ্রধান সালভাতর ফারিনাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে বিবিসি। তবে তিনি বলেছেন, তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন এবং ভালোই আছেন।
রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৮ জন, এতে দেশটিতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৮২ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে এদিন একজন একজনের মৃত্যু হওয়ায় এখানে মৃতের সংখ্যা ৫১ জনে দাঁড়িয়েছে।
চীন ও ইতালির পর সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইরানে ১৯৪ জন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে মৃতের সংখ্যা একদিনে বেড়েছে ৪৯ জন।
বিশ্বের সব মহাদেশে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২২ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে ১৯ জন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের আর অপর তিন জন ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডার। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপে ইতালির পর আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ফ্রান্সে। এখনে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১১০০ ছাড়িয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা অন্তত ১৯ জন।
জার্মানিতে শনি ও রোববার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০০ জন বৃদ্ধি পাওয়ার পর সোমবার আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১১১২ জনে দাঁড়িয়েছে।
জাপানে মৃতের সংখ্যা ১৫ জনের দাঁড়িয়েছে যাদের মধ্যে সাত জন ডায়মন্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরীতে ছিলেন।