করোনাভাইরাস: আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার
চীনে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩৬ জনে, আক্রান্তের সংখ্যা ত্রিশ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
উহানের যে চিকিৎসক প্রথম এ ভাইরাসের বিপদ নিয়ে সতর্ক করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কোপে পড়েছিলেন, তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বৃহস্পতিবার।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মূল ভূখণ্ডে বৃহস্পতিবার আরও ৭৩ জন প্রাণ সংহারী এ নতুন করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। তাতে চীনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩৬ জনে। চীনের বাইরে কংকং ও ফিলিপিন্সে মারা গেছে আরও দুজন।
কেবল চীনের মূল ভূখণ্ডেই নভেল বা নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ১৪৩ জনে। চীনের বাইরে আরও অন্তত ২৫টি দেশ ও অঞ্চলে আড়াইশর বেশি মানুষ এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে।
সিএনএন এর হিসাবে সব মিলিয়ে পুরো পৃথিবীতে ৩১ হাজার ৪২০ জনের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে এ পর্যন্ত।
বেশিরভাগ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে চীনের হুবেই প্রদেশে, যে প্রদেশের উহান শহরকে এ ভাইরাসের ‘উৎসস্থল’ বলা হচ্ছে।
ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে রোধ করতে চীনের বেশ কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার লোককে রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টিন করে। কিন্তু ভাইরাস ছড়ানো ঠেকানো যাচ্ছে না।
জাপানের ইয়োকোহামা এবং হংকং বন্দরে দুটি প্রমোদতরীর কয়েক হাজার যাত্রী ও ক্রুকে পর্যবেক্ষণের জন্য জাহাজেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ইয়োকোহামা বন্দরের কাছে নোঙ্গর করে থাকা ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর হংকং বন্দরের ওয়ার্ল্ড ড্রিমে আক্রান্ত হয়েছেন আটজন।
বেইজিং বলেছে, নতুন করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে ‘জনযুদ্ধ’ শুরু করেছে তারা। আর এ কাজে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে টেলিফোন করে তিনি বলেছেন, নতুন এ করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সম্ভব সবকিছুই চীন করবে। আর এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার বিষয়ে চীন আত্মবিশ্বাসী।
তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চীনের পাশাপাশি পুরো বিশ্বের অর্থনীতিই ক্ষতির মুখে পড়ছে। আতঙ্কের কারণে বিভিন্ন দেশ চীনের সঙ্গে বিমান ও জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখায় বৈশ্বিক পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিভিন্ন বড় কোম্পানি চীনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখায় সামনের দিনগুলোতে অটোমোবাইল ও ইলেক্ট্রনিক্স থেকে শুরু করে তৈরি পোশাক ও প্লাস্টিকসহ নানা পণ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।