করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও দুইজন
বাংলাদেশে আরও দুইজনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; যাদের একজন হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন, অন্যজন বিদেশফেরত একজনের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট ১০ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ল, যাদের মধ্যে প্রথম দফায় আক্রান্ত তিনজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন; হাসপাতালে ভর্তি আছেন সাতজন।
অধাপক ফ্লোরা বলেন, নতুন আক্রান্ত দুজনই পুরুষ। তাদের মধ্যে একজন ইতালি থেকে ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।
আরেকজন দেশেই ছিলেন, তবে তার বাড়িতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন এসেছিলেন। ওই প্রবাসীর সংস্পর্শে এসেই আক্রান্ত হয়েছেন দেশে থাকা ওই ব্যক্তি।
“সেই প্রবাসীর শরীরে সামান্য জ্বর ছিল, তবে তিনি রিপোর্ট করেননি। তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ হাই কমিশনকে জানানো হবে।”
এ মুহূর্তে দেশে ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন এবং ৪৩ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে জানান ডা. ফ্লোরা।
তিনি বলেন, “পারিবারিকভাবে সেলফ কোয়ারেন্টিনের বিষয়টি খুব শক্তভাবে পালন করার জন্য আমরা বার বার বলে আসছি। এখন পর্যন্ত রোগটি কমিউনিটি পর্যায়ে ছড়ায়নি। কিন্তু বিদেশে থেকে এসেছেন বা আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।”
বিদেশ থেকে এসেছেন এবং জ্বর, গলা ব্যাথা অথবা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিয়েছে, কিংবা বিদেশ থেকে আসা কারও সংস্পর্শে এসেছেন- এমন কারও মধ্যে কভিড-১৯ রোগের উপসর্গ দেখা দিলে সরাসরি কোনো হাসপাতালে না গিয়ে আইইডিসিআরের হটলাইনে (০১৯৪৪৩৩৩২২২) ফোন করার পরামর্শ দেওয়া হয় ব্রিফিংয়ে।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক বলেন, “এক্ষেত্রে আপনারা গণপরিবহনও ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজনে এম্বুলেন্স দিয়ে আপনাদের নিয়ে আসা হবে। প্রয়োজন হলে আইইডিসিআরের টিম গিয়ে বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে।”
তবে হাঁচি, কাশি, সর্দি হলেই করোনাভাইরাস ধরে নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কমিউনিটি ট্রান্সমিশন নেই। অর্থাৎ রোগটি সামাজিকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি।”
বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে তিনজন এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানায় আইইডিসিআর।
ওই তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে এসেছিলেন। ইতালি ফেরত একজনের পরিবারের সদস্য ছিলেন আক্রান্ত তৃতীয়জন। ওই সময় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি আরও চারজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল।
এরপর গত ১৪ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও দুজন আক্রান্তের খবর জানান। ওই দুজন ইউরোপের দেশ ইতালি ও জার্মানি থেকে এসেছিলেন। তাদেরই একজনের মাধ্যমে পরিবারের এক নারী ও দুই শিশুর আক্রান্ত হওয়ার খবর আইডিসিআর জানায় সোমবার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৬১টি দেশে ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; মৃতের সংখ্যা ৭১০০ ছাড়িয়ে গেছে।