করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তারে বাড়ছে বিশ্ব মহামারীর শঙ্কা
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় তা মহামারী আকার ধারণ করার শঙ্কা বাড়ছে।
বেশিরভাগ সংক্রমণের ঘটনা চীনে ঘটলেও দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি এবং ইরান ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করছে।
একই সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ কোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন, তখনই তাকে বিশ্ব মহামারী বলা যায়।
চীনে গত বছর এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে প্রায় ৭৭ হাজার মানুষ এতে সংক্রমিত হয়েছে এবং ২ হাজার ৬শ’ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বের ২৬ টি দেশে আরো ১২০০ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে এবং ২০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। সোমবার ইতালিতে চতুর্থজনের মৃত্যু হয়েছে।
কভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী মারা যাওয়ার অনুপাত ১ থেকে ২ শতাংশ। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলছে, মৃত্যুর হার এখনো জানা যায়নি।
সোমবার ইরাক, আফগানিস্তান, কুয়েত এবং বাহরাইন প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর জানিয়েছে। এ সমস্ত সংক্রমণ ধরা পড়েছে ইরান থেকে আসা মানুষজনের মধ্যে।
ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ কমে আসছে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট আঙ্গিলার স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক অধ্যাপক পল হান্টারও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, চীনের বাইরে এই ভাইরাস সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তা ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’।
তবে বিভিন্ন দেশ এখনো আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে ভাইরাসটিকে বেশিদূর ছড়াতে না দেওয়ার কারণে এ মুহূর্তে পরিস্থিতিকে মহামারী হিসাবে দেখা হচ্ছে না বলে বিবিসি কে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস। দেশগুলো পদক্ষেপ না নিলে এটি আরো বেশি হারে ছড়িয়ে পড়বে। তাই এই ঠেকানোর চেষ্টাটিই জরুরি বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান এবং ইতালির সম্মিলিত পরিস্থিতি বিচার করলে বলা যায় মহামারী প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তার মানে বিশ্বে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঘটেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষে মানুষে এর বিস্তার ঘটছে।
প্রতিটি দেশেই ভাইরাসের যে সংক্রমণ ঘটতে দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে চীনের কোনো যোগসূত্র নেই। ইতালি ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে যে কড়াকড়ি পদক্ষেপ নিয়েছে তা অনেকটা চীনের মতই।
ওদিকে, ইরানের পরিস্থিতি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কয়েকটি শহরে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাওয়ার খবর দিয়েছে এবং লেবাননেও ইরান থেকে সেখানে যাওয়া একজনের ভাইরাস সংক্রমণ দিয়ে প্রথম সেদেশে ভাইরানের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।
মহামারীর মত ভাইরাসটি ছড়াতে থাকলেও এর বিস্তারের গতিটি সীমার মধ্যে রাখা এখনো জরুরি। শীতের শেষ নাগাদ কোনোভাবে ভাইরাসটির বিস্তার আটকে রাখা গেলে ঊষ্ণ আবহওয়ায় বাতাসে ভাইরাসটির টিকে থাকার সময় কমে আসবে। যেমনটি আমরা সিজনাল ফ্লুর ক্ষেত্রে দেখি। তবে সে ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা নেই।