করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই গাজীপুরে মসজিদ খোলার ঘোষণা মেয়রের
দেশে কোভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে সরকার যখন সব মসজিদে মুসল্লিদের যাওয়া বন্ধ করেছে, তখন গাজীপুরের মেয়র তার এলাকার মসজিদগুলো মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এক মাস লকডাউনের পর গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানা খোলার দুদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের বোর্ড বাজার আঞ্চলিক অফিস থেকে ফেইসবুকে এক ভিডিও বার্তায় এই সিদ্ধান্ত জানান তিনি।
বাংলাদেশে যে সব এলাকায় কোভিড-১৯ রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে, তার একটি হল শিল্প এলাকা গাজীপুর। পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ায় ভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়াতে পারে বলেও উদ্বেগ রয়েছে।
এর মধ্যেই মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, “গাজীপুর মহানগরীতে মাত্র কয়েকটি এলাকায় করোনাভাইরাস (রোগী) রয়েছে। বাকিগুলো পাশের উপজেলাগুলোতে অবস্থান করছে।
“যেহেতু গাজীপুরের গার্মেন্টসগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, তাই এ রমজান মাসে এখন আর মসজিদে অল্প সংখ্যক মুসল্লিদের জন্য সীমাবদ্ধ রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। শুক্রবারের জুমার নামাজ ও রমজানের তারাবির নামাজে মুসল্লিগণ অংশ নিতে পারবেন। এতে সিটি কর্পোরেশনের কোন বাধা থাকবে না।”
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত ৬ এপ্রিল দেশের সব মসজিদে বাইরে থেকে মুসল্লি ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। বলা হয়, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ মসজিদের খাদেমরা মিলে পাঁচজনের জামাত হবে। রোজা শুরুর পর তারাবির জামাতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১২ জনে উন্নীত করা হলেও বাইরে থেকে কারও ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা ওঠেনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর বলেন, “যারা অসুস্থ নয় এবং যে সব ওয়ার্ডে করোনাভাইরাস পজেটিভ রোগী পাওয়া যায়নি, সে সব এলাকার মসজিদে যদি মুসল্লিরা নামাজ পড়তে চায়, তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা হবে না।
“তবে ওই সব এলাকায় যেন বাইরে থেকে কোনো লোক করোনার উপসর্গ নিয়ে আসতে না পারে, সে দিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।”
মেয়র জাহাঙ্গীর আরও বলেন, “গাজীপুরের গার্মেন্টস ও আশপাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু খোলা হয়েছে, সেহেতু এ এলাকার মানুষকে আর বন্দি রাখা ঠিক হবে না। ওয়ার্ডভিত্তিক ধানকাটাসহ অন্যান্য কৃষিকাজ যেগুলো আছে, তা যেন তারা করতে পারে।”
মেয়রের সিদ্ধান্তের বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক সভাপতি এস এম তরিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়রের মহানগরের মসজিদগুলোতে তারাবি ও জুম্মার নামাজ উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণার কথা শুনেছি। তবে সেটা তার নিজস্ব বক্তব্য। এটা কোনো সরকারি বক্তব্য নয়।
“ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে দেশের মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে ইতোপূর্বে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তাই এখনও বলবৎ আছে। আমি এর বাইরে অন্য কোনো বার্তা বা নির্দেশনা পাইনি।”