November 27, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

করোনাকালীন মানবিক কর্মসূচিতেই এক বছর পার মহানগর যুবলীগের

পরিস্থিতির উত্তরণ হলে শীঘ্রই সাংগঠনিক কর্মসূচিতে ফেরার প্রত্যাশা

জয়নাল ফরাজী
খুলনা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির এক বছর পার হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। কাগজে কলমে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কমিটি অনুমোদন হলেও ১৭ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় সফিকুর রহমান পলাশ-শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনের নেতৃত্বাধীন ২৫ সদস্যের কমিটি। অনুমোদনের পর সংগঠনকে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ, নেতৃত্বপ্রত্যাশীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক, মুজিববর্ষ উদযাপনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। বরং গত সাড়ে ৬ মাস ধরে করোনাকালীন বিভিন্ন মানবিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত রয়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি গঠনের একটি বর্ধিত সভা করতে পেরেছে নগর যুবলীগ। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীর ৩৬টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ৫টি থানায় যুবলীগের কমিটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়া গত ১৭ নভেম্বর খুলনার ২৩ জন সরকারি কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্ট করার অনুষ্ঠানে যুবলীগের নেতৃত্বপ্রত্যাশীদেরও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার প্রতিশ্রুতি দেন যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ। বিষয়টি নিয়ে একমত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনও। ওই সময়ে খুলনা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকায় ফেব্রুয়ারিতে যুবলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মীসভা করে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এরই মাঝে খুলনা সরকারি বিভাগীয় গণ-গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী একুশে বইমেলায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ নামে একটি স্টল দিয়ে আলোচনায় আসে মহানগর যুবলীগ। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর অন্তত এক হাজার বইয়ের সংগ্রহ ছিল ওই স্টলে। সবকিছু ছাপিয়ে একুশে বইমেলায় বইপ্রেমীদের নজর কাড়ে যুবলীগের বঙ্গবন্ধু কর্নার। এরপরই সারা বিশ্বের ন্যায় দেশেও করোনার হানা।
করোনা সংক্রমণের কারণে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিলেও মানবিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে উজ্জ্বল ছিলেন যুবলীগের নেতারা। করোনার শুরু থেকে মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ও যৌথভাবে কয়েক হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদের জন্য পুষ্টিকর খাবারও পৌছে দিয়েছেন তারা। এছাড়া অন্যান্য নেতারাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও ঠিকঠাক মতো সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। করোনার মধ্যেই নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, গাছের চারা বিতরণে ব্যাঘাত ঘটেনি। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিববাড়ী থেকে খুলনা রেলস্টেশন পর্যন্ত ব্যতিক্রমী দেয়াল চিত্রটি নজর কাড়ে সব মানুষের। বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের পরিচিতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগটি নেয় নগর যুবলীগ। তবে পরিস্থিতির উত্তরণ হলে শীঘ্রই সাংগঠনিক কর্মসূচিতে ফেরার প্রত্যাশা যুবলীগ নেতাদের।
এ বিষয়ে নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন বলেন, ‘করোনার কারণে সাংগঠনিক অনেক কর্মসূচিই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। করোনার মধ্যেই যুবলীগ নেতারা মানবিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন। পরিস্থিতি ভালো হলে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের কমিটি নতুন করে গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা পাওয়ার আমরা ওয়ার্ডগুলোতে হাত দেব। পরে থানা কমিটিও গঠন করা হবে। ওয়ার্ডে কর্মীসভা করে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে যুবলীগকে সংগঠিত করতে চাই। তবেই যুবলীগ আরও শক্তিশালী হবে।’

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *