ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দৌরাত্মে রোগীদের ভোগান্তি
তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
তেরখাদা প্রতিনিধি
তেরখাদা উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবলের দৈন্যদশায় ২/৩ জন ডাক্তার দিয়েই চলছে উপজেলা প্রায় দেড় লক্ষাধিক লোকের স্বাস্থ্য সেবা। প্রতিনিয়তি দু’তিনশত রোগী দূর দূরান্ত থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। রোগীদের কে নামে মাত্র প্যারাসিটামল, এন্টাসিড ও এ্যামোক্সসিলিন জাতীয় ওষুধ দিয়ে দামী ওষুধ গুলো বাইরে থেকে কিনে নিতে বলেন। প্রায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২/৩টা পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে রোগীর আনাগোনা চেয়ে ভীড় জমাতে থাকে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিবৃন্দ।
তারা চিকিৎিসকদের জন্য ওষুদের স্যাম্পল ও ডায়েরী, কলমসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে চিকিৎসকদের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বার্তায় মগ্ন থাকে। অন্যদিকে রোগীদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। সেদিকে খেয়াল নেই কারো। চিকিৎসকরাও এসকল বিক্রয় কর্মীদের সাথে কথা বলতে আগ্রহ বোধ করেন। রোগীর সেবা বন্ধ করে চিকিৎসকরা ওষুধ কোম্পানীর এসকল প্রতিনিধিদের সাথে গল্পে মগ্ন থাকেন। রোগীদের নামমাত্র ওষুধ লিখে দিয়ে ঐ সকল কোম্পানীর ওষুধ গুলো বাজার থেকে কিনে নিতে বলেন।
অন্যদিকে কোন রোগী চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বেরোনের সাথে বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয় কর্মীবৃন্দ তাদের কে থামিয়ে মোবাইলে পেসক্রিপসনের ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকেন। এভাবে ১৫/২০ জন কর্মী ছবি তোলায় রোগীর ভোগান্তীতে পড়তে হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে প্রতিবেদক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ডিউটিরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ইতি রানী বিশ্বাস এর কক্ষের সামনে কয়েকজন রোগীর লাইন দেখে তিনি চিকিৎসকের কক্ষের ভিতরে গিয়ে দেখতে পান তিনি এ্যাকনিক ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি সাধন কুমার এর সাথে গভীর সখ্যতায় মগ্ন হয়ে আলাপ আলোচনা করছেন। বাইরে অপেক্ষা করছেন আরো প্রায় ২০/২৫জন ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি।
বাইরে রোগীদের লাইন থাকা সত্তেও চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানীর লোকদেরকে সাথে এতো সময় কেন দিচ্ছেন সে বিষয়ে প্রতিবেদক জানতে চাইলে, উক্ত চিকিৎসক কোন উত্তর দেয়না। তার নাম ও পদবী জানতে চাইলে তিনি বিরক্তবোধ করে বলেন, সাংবাদিকরা শুধু আমাদের পেছনে কেন লাগে?
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, রোগী দাড় করে কোম্পানীর রোগীদের সাথে কথা বলার কোন এখতিয়ার নেই। তবে অবসর সময়ে কোম্পানীর লোকদের সাথে কথা বলা যেতে পারে। রোগী দাড় করে কোম্পানীর রোগীদের সাথে কথা বলার বিষয়টি সত্য হলে আমি সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো।