এমপি লিটন হত্যা: কাদের খানসহ ৭ আসামির ফাঁসির রায়
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খানসহ সাত আসামির সবার ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক বৃহস্পতিবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রধান আসামি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ডা. আবদুল কাদের গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে লিটনের আগে সংসদ সদস্য ছিলেন। অন্যরা তার ঘনিষ্ট লোকজন।
এরা হলেন- তার একান্ত সহকারী মো. শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আবদুল হান্নান, গৃহকর্মী মেহেদি হাসান, দূর সম্পর্কের ভাগ্নে ও বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক শাহীন মিয়া, সাবেক পোশাকশ্রমিক আনোয়ারুল ইসলাম রানা ও পলাতক চন্দন কুমার রায়।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামি কসাই সুবল চন্দ্র রায় কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা যান।
রায় ঘোষণার সময় চন্দন ছাড়া সব আসামি কাঠগড়ায় ছিলেন। মামলার সাক্ষী ও নিহতের স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদি লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত এই রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে এই রকম একটি জঘন্য ঘটনার কলঙ্কমুক্ত হতে চায় সুন্দরগঞ্জবাসী।
অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ডের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কাদের খানের আইনজীবী মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল হবে।
“বাকি ছয় আসামি ‘গরিব হওয়ায়’ তারা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপিল করবেন।”
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহবাজ গ্রামের মাস্টারপাড়ার বাড়িতে লিটনকে গুলি করা হয়।
আশংকাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানেই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মারা যান তিনি।
এঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী। তদন্ত শেষে কাদেরসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত বাদী, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের ১৮ মাসের যুক্তিতর্ক শেষে ১৯ নভেম্বর আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর দিন রেখেছিলেন।
বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর বেলা ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত ছয় আসামিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।