এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে চার কমিটি
বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে নয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান।
ত্রাণ সচিব শাহ কামাল জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফয়জুর রহমানকে আহ্বাবায়ক করে গঠিত এই কমিটিকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বুয়েট এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন করে প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের দেড় মাস না গড়াতেই বনানীর ২২ তলা বৃহস্পতিবার বনানীর ফারুক-রূপায়ন টাওয়ারে এ ঘটনায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৭০ জন, তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কুর্মিটোলা হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের সঙ্গে আহতদের দেখতে যান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ।
হানিফ বলেন, “এখন সময় এসেছে আমাদের সবার। দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে সজাগ হতে হবে। বিদ্যমান আইন-বিধি অনুসরণ করে বিল্ডিং কোড মেনে কাজ করতেই হবে।”
ওই ভবনের নকশা অনুমোদন এবং নির্মাণ কাজে ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল কি না- তা তদন্তে ছয় সদেস্যর আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।পূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. ইয়াকুব আলী পাটওয়ারীকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসীর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিকল্পনা) আবু সাঈদ চৌধুরী, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মইনুল ইসলাম এবং রাজউক এর নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে এ কমিটিতে।
এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদন ও ভবন নির্মাণে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা সনাক্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে এই কমিটির সদস্যদের। পূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এ কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং সার্বিক বিষয় তদন্ত করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ ছয় সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করেছে।
অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে মতামত ও সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, পুলিশের গুলশান জোনের উপ কমিশনার এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ভূইয়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন এ কমিটিতে।
এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে পাঁচ সদস্যের আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে।