এফআর টাওয়ারের তাসভীরের জামিন
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের মামলায় ওই ভবনের অন্যতম মালিক বিএনপি নেতা তাসভীর উল ইসলামকে জামিন দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় এই জামিন মঞ্জুর করেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই শেখ রাকিবুর রাহমান জানান।
তাসভীরের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিন শুনানিতে বলেন, এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ মামলায় দণ্ডবিধির ৪৩৬ ধারা যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তার মক্কেল যেহেতু ওই ভবনের নির্মাতা নন, সেহেতু তার ক্ষেত্রে ওই ধারা প্রযোজ্য হয় না।
বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে যেখানে ২৩ তলা এফআর টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, সেই জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।
আধাআধি ভাগ হলেও রূপায়ন পরে বিভিন্ন ফ্লোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেয়। এর মধ্যে ২১, ২২ ও ২৩ তলার মালিকানা রয়েছে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হাতে। কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীর এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনিই এফআর টাওয়ারের পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
গত ২৮ মার্চ ওই ভবনে আগুন লেগে ২৭ জনের মৃত্যুর পর জানা যায়, ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছিল এবং অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থাও সেখানে ছিল না। এরপর গত ৩০ মার্চ বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত যে মামলা করেন, তাতে ফারুক ও তাসভীরের পাশাপাশি রূপায়ন গ্র“পের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলকেও আসামি করা হয়।
‘অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে মানুষের জানমালের ক্ষতি করা, অবহেলার ফলে মৃত্যু সংঘটন, তাচ্ছিল্যপূর্ণ কার্যকলাপের ফলে অপরাধজনক অগ্নিকাণ্ডে মানুষের প্রাণহানি, মারাত্মক জখমসহ সম্পদের ক্ষতি’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।
সেই রাতেই বারিধারা থেকে তাসভীরকে এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ফারুককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রূপায়নের মুকুল পলাতক বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। গ্রেপ্তারের পরদিন ফারুক ও তাসভীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। রিমান্ড শেষে ৮ এপ্রিল তাদের আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে।
তাসভীরের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, তার মক্কেল অগ্নিসংযোগ করেননি বা তার কোনো অবহেলাও ছিল না। কারও আর্থিক ক্ষতি সাধনের প্রশ্নও তার ক্ষেত্রে নেই। তিনি ভূমির মালিকও নন। তার উপর ভবনের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব তার নয়।