January 22, 2025
জাতীয়

এডিস মশা হয়তো ‘ফ্লাইটে’ চড়ে এসেছে : মন্ত্রী

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

এডিস মশা কীভাবে আসছে- সে প্রশ্ন তুলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের ধারণা, হয়তো রোগী অ্যাফেক্টেড হয়ে এসেছে অথবা কিছু মশা ফ্লাইটে এসেছে।

মন্ত্রী বলেন, এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এটা এখন পর্যন্ত যদিও ঢাকাকেন্দ্রিক, তারপরও দেখা যাচ্ছে এখানে এসে অ্যাফেক্টেড হয়ে কেউ কেউ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। সেখানেও এটা বিস্তার লাভ করতে পারে। ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে একথা বলেন মন্ত্রী।

বহির্বিশ্বের ডেঙ্গু রোগীর তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ফিলিপাইনে এক লাখ ৩৮ হাজার এই মুহূর্তে অ্যাফেক্টেড। ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকার তথ্য দিয়ে বলেন, থাইল্যান্ডে বছরের প্রথম ছয় মাসে ২০ হাজার ৭শ মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। গত চার বছরের মধ্যে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছরে ১৪ হাজার ৯শ জন অ্যাফেক্টেড এবং ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এটা এখন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এক সময়ে অতিমাত্রায় ডেঙ্গু রোগী ছিল এবং অনেক বেশি লোক আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ও মৃত্যুবরণ করেছে। এজন্য তাদের ভালো কিছু অভিজ্ঞতার কথা আলোচনায় আসে, এ কথাটা এজন্য রেফার করছি। এটা ফিলিপাইন থেকে মালয়েশিয়া, মালয়েশিয়া থেকে থাইল্যান্ড, থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসতেই পারে যদি, তাহলে ঢাকা থেকে কুমিল­া, নোয়াখালী, সিলেটে যাবে না- এই কথাটা আমি কী করে বলবো?

‘কীভাবে আসছে? হয়তো রোগী ওখানে অ্যাফেক্টেড হয়ে আসছে অথবা কিছু মশা যানবাহনের ভিতরে অর্থাৎ, ফ্লাইটের ভিতরে চলে আসছে। একটি-দু’টি যদি কোনোরকমে আসতে পারে তাহলে সে মশাটা যদি এক হাজারটা ডিম পেড়ে ফেলে তাহলে তো এক হাজারটা মশার উৎপত্তি হয়ে গেলো। আর এক হাজার মশা প্রত্যেকটাই জীবাণু বহন করছে। তাহলে এক হাজার মানুষকে যদি কামড়াতে পারে তাহলে এক হাজার জন অ্যাফেক্টেড হবে। অর্থাৎ, এটা গ্রামাটিক্যাল বিস্তার লাভ করতে পারে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমাদের সতর্ক না হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। সারা পৃথিবী এই চ্যালেঞ্জটা মোকাবিলা করছে কনটিনিয়াসলি, আমরাও এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মাথায় রাখতে চাই।

এডিস মশার বংশবিস্তার নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে জন্ম নেয়। সাধারণত আমাদের বাড়িঘরের ছাদ, ফুলের টব, ফ্রিজের পিছনে, এয়ার কন্ডিশনারের পানিতে ডিম পাড়ে। ওই জায়গাটা ধ্বংস করার জন্য তারা ফগারকে নেগলেট করে, রেয়ারলি করে।

মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে ৯০ শতাংশ এডিস মশা কমানো যায় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এজন্য মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছি, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার করছি। সেই হিসেবে আমরা মনে করছি আমরা রাইট।

সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ- এ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, হয়তো আমাদের সিটি করপোরেশনের ঘাটতি থাকতে পারে। তারা দায়িত্ব পালনের জন্য রেগুলোর আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। ১৫৪ জন কর্মকর্তাকে প্রতি ওয়ার্ডে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি।

‘ওষুধ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক আছে, ভারতে গিয়ে শুনেছি এই সিজনে যে সব ওষুধ কার্যকরের মাত্রা বেশি পেয়েছেন পরবর্তী সিজনে হয়তো কার্যকারিতা কমে গেছে। আপনারা সবাই জানেন, বাসাবাড়িতে সবাই অ্যারোসল ব্যবহার করি, আগে হয়তো দেখা যেত একবার অ্যরোসল মারলে সব মশা মরে যেত। এখন দেখা যায় সবগুলো মশা মরে না। এসব কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।’

সিটি করপোরেশনের কাছে ওষুধ মজুদ আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মনে করেন না কেউ বসে আছে। চেষ্টা করা হচ্ছে সবদিকে। গাজীপুরের মেয়র বলে গেলো ২০ টন ওষুধ নিয়ে এসেছে, হু সার্টিফাইড। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন দক্ষিণের কাছে ১০ টন ধার নিয়েছে। সিটি করপোরেশনের যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, আমি অঙ্গীকারবদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে তা সমাধান করার জন্য।

এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুর ঘনত্ব সব জায়গায় সমান হয় না। আমার মনে হয় গুলশানে হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের মধ্যে ডেঙ্গুর সংখ্যা কম হবে। কারণ, এডিস মশার গায়ে শক্তি কম সে বেশি দূর উড়তে পারে না। আর যেখানে হরিজেন্টাল বাড়িঘর সেখানে প্রাদুর্ভাব বেশি হবে। কলকাতা বললো, এবার আক্রান্ত হওয়ার কম কারণ হলো বৃষ্টি আগের তুলনায় অনেক কম হয়েছে।

এডিস মশা নিধন চ্যালেঞ্জ মনে করেন কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো চ্যালেঞ্জ মনে করি। চ্যালেঞ্জ মনে করে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। মাঠে আমি নিজেও আছি। ‘এই চ্যালেঞ্জ শুধু বাংলাদেশে নয়। সিঙ্গাপুরের মতো দেশ সেখানে ১৩ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। এটা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট।’

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *