এডিসির পিওন কর্তৃক ভিপি সম্পত্তি লীজ নবায়ণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
দ: প্রতিবেদক
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) পিয়ন আব্দুল ওয়াদুদ তথ্য গোপন করে তার স্ত্রী তাছলিমা বেগমের নামে গোপনে ০.৪৬ একর লীজ নিয়ে বর্গা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার খাজাডাঙ্গা গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক মোঃ অলিয়ার রহমান। গতকাল শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই দুর্নীতি ও প্রতারণার সাথে স্থানীয় ভিপি সহকারী ও তহশীলদারসহ কতিপয় কর্মচারী জড়িত রয়েছেন। এই লীজি জমির মালিক বৃদ্ধা জমাতুল মোড়ল এখন মৃত্যু পথযাত্রী। আমি তার কোন চিকিৎসা করাতে পারছিনা। ঠিকমতো আহার যোগাতে পারছিনা। গরীবের একমাত্র শেষ সম্বটুকু কেড়ে নেওয়ায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসেছি। আর জমি পাওয়ার জন্য বারবার আবেদন করলেও অদৃশ্য কারণে দরখাস্ত গুলো গায়েব হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অনুকূলে তদন্ত প্রতিবেদন থাকা সত্তেও আমরা জমি পাচ্ছিনা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খাজাডাঙ্গা মৌজার এস এ ৫৯৭,৫৯৮ ও ৫৯৯ খতিয়ানের ৩০৩৮ও ৩০৩৯ দাগের মোট ১.০১ একর জমি লীজ কেসভুক্ত। যার মধ্যে ০.৪৬ একর জমি প্রাক্তন লীজি আমার নানা জমাতুল্লা মোড়ল ডিসিআর নবায়নে ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় মারাত্মক অসুস্থতার কারণে ডিসিআর নবায়ন করতে পারেন নি। তিনি অত্যান্ত বৃদ্ধ ও প্যারালাইজড অবস্থায় শয্যাশায়ী থাকায় আমি ওই সংসারে পালিত নাতি এবং একজন কর্মক্ষম পুরুষ হিসেবে তার এ লীজের জমিটুকু চাষাবাদ ও ইটের ভাটায় কাজ করে পারিশ্রমিক যা পাই তা দিয়ে বৃদ্ধ নানা ও নানীসহ আমার সংসারের ছেলেমেয়েদের ভরণপোষন করে আসছিলাম। আমি অশিক্ষত হওয়ায় এবং জমির বিষয়ে না জানার কারণে কয়েক বছর নবায়ন করতে পারিনী। পরবর্তীতে বিষয়টি জানার পর ভোগদখলীয় লীজভুক্ত জমি আমার নানার পক্ষে ২০০৯ সালের ২১ জুন উপজেলা ভূমি অফিস রূপসাতে নবায়নের জন্য আবেদন করি। আবেদনের (নম্বর ২৫৩, তারিখ ২৩/০৬/২০০৯) প্রতিবেদন পাঠনোর জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘাটভোগে পাঠানো হলে ওই অফিসের তহশীলদার ভোগ দখলে থাকায় বকেয়া সহকারে হালনাগাদ লীজ নবায়নের জন্য প্রতিবেদন পাঠান (স্মারক নং২৩৬) তারিখ ২৪/১২/১৯ইং। উক্ত প্রতিবেদন উপজেলা অফিসে আসার পর নথি পাওয়া যাচ্ছেনা এমন অজুহাত দেখিয়ে ফাইল দুই মাসেরও অধিক সময় আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে দরখাস্ত হারিয়ে গেছে, নতুন করে আবেদন করতে হবে বলে জানান ভিপি সহকারী আহম্মদ আলী। তার কথামতো পুনরায় আবেদন করি। এরপর আমার সাথে বছরের পর বছর প্রতারণা করা হয়। লীজ নবায়নের জন্য আমার অনুকূলে সুপারিশ আসার পর ভিপি সহকারী আহম্মদ আলী বকেয়াসহ হাল সন পর্যন্ত উক্ত .৪৬ শতক জমি পাওনা হিসাব করে মোট ৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে আমাকে ঘোরাতে থাকেন। আমি তার মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করে দেড় বছর ঘুরতে থাকি। এরই মধ্যে ভিপি সহকারী আহম্মদ আলীর সাথে গোপন আতাত করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) পিয়ন আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি (ওয়াদুদ) সরকারী চাকুরীর তথ্য গোপন করে তার স্ত্রী তাছলিমা নামে লীজ আবেদন করেন অত্যান্ত গোপনে। আর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনকে দিয়ে আমাদের বিপক্ষে রিপোর্ট প্রদান করেন। তহশীলদার ফরহাদ হোসেন রির্পোটে উল্লেখ করেন যে- আমরা ইজারা গ্রহণের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি তার কোন প্রমাণপত্র পাওয়া যায়নি। আমাদের পূর্বের কাগজপত্র লুকিয়ে রেখে এবং পরের দরখাস্তের নিস্পত্তি বা তদন্ত না করেই তাছলিমার অনুকূলে গত ২৪/৫/১২ ইং তারিখে ১৩৮৭-১৪১৯ সময় পর্যন্ত ডিসিআর ইস্যু করেন। যা সম্পূর্ন বে-আইনি। আর ভিপি সহকারী আহম্মদ আলী, তহশীলদার ফরহাদ হোসেন এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) পিয়ন আব্দুল ওয়াদুদ বহুদিন একই অফিসে কর্মরত থেকে স্ত্রীসহ নামে বেনামে গরীব ও অসহায় মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।