May 21, 2024
করোনাজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

এক মাসে দেশের সাত বিভাগে ছড়িয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন গত এক মাসে দেশের সাত বিভাগের ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আইইডিসিআরে ১৪৮টি করোনার নমুনা পরীক্ষায় ১১৮টিতেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা মোট জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মধ্যে ৮০ শতাংশ। আর বাকি ৩০টি নমুনা পরীক্ষায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা হার বিবেচনায় ২০ শতাংশ। এর মধ্যে ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন বিএ.১ শনাক্ত হয়েছে ৫৮ জনের, যা শতকরা হিসাবে ৩৯ শতাংশ ও বিএ.২ শনাক্ত হয়েছে ৬০ জনের দেহে, যা শতকরা হিসাবে ৪১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা আরও বলা হয়, ঢাকা বিভাগের ৭০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে ৬৫টিতে ওমিক্রন এবং পাঁচটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের ১৮টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে ১৪টিতে ওমিক্রন ও বাকি চারটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের ২২টির ১৫টিতে ওমিক্রন ও ৭টিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়।
এছাড়া খুলনায় ১৪টির ১২টিতে ওমিক্রন ও দুইটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বরিশালে নয়টির ছয়টিতে ওমিক্রন ও তিনটিতে ডেল্টা, সিলেটে ছয়টির তিনটিতে ওমিক্রন ও তিনটিতে ডেল্টা, এবং রংপুর বিভাগের সাতটির তিনটিতে ওমিক্রন এবং চারটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। একমাত্র ময়মনসিংহ বিভাগে গত এক মাসে কোনো ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি। বিভাগটিতে দুইটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে দুটিতেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আট হাজারের নিচে নেমে এসেছে তিন সপ্তাহ পর; সেই সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার আরও কিছুটা কমেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে সাত হাজার ২৬৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ।
গত ১৭ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছিল। এরপর সংক্রমণ টানা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ২৮ জানুয়ারি পৌঁছায় ৩৩ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়। এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। ছয় দিনের মাথায় তা ৮ হাজারের নিচে নামল। তিন সপ্তাহ পর বুধবার শনাক্ত রোগীর হার কমে ১৮ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছিল। বৃহস্পতিবার তা আরও কমে ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩৫ জনে। একদিনে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ৭৪৪ জন।
গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে চার হাজার ৯৬৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৮ শতাংশের বেশি। যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী। তাদের মধ্যে ২২ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জন, রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের তিনজন, সিলেট বিভাগের দুইজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন তিনজন। তাদের ২৮ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ছয়জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ছয়জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *