একুশ আমার অহংকার
দ: প্রতিবেদক
আজ ৮ই ফেব্রুয়ারি। মহান ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্র“য়ারির অষ্টম দিন। ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বজলুর রহমান বাঙালী হয়েও বাংলা বর্ণমালাকে আরবিকরণের পরিকল্পনা করেন। এই উদ্দেশ্যে ১৯৪৯ সালের ৯ই মার্চ মাওলানা আকরাম খাঁ-এর নেতৃত্বে ১৬ সদস্য পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি গঠিত হয়। এর তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের দাবি ক্রমাগত জোরালো হয়ে উঠতে থাকে।
এ বছর ২৩ ফেব্র“য়ারি পূর্ববাংলার শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক প্রমূখের পক্ষ থেকে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের দাবি জানিয়ে তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পণ্ডিত ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ, কাজী মোতাহার হোসেন এতে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তী ১১ই মার্চ আন্দোলন দিবসে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের আহ্ববান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ একটি লিফলেটে বিতরণ করে।
এতে বলা হয়: ‘বাংলা এখনও অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হয় নাই; শিক্ষার মাধ্যমে করা হয় নাই; বরং ঘৃণ্য বি.পি.সি. সুপারিশ ষড়যন্ত্র করে বাংলাকে সরাসরি বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাকে সমূলে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ‘আরবি হরফে বাংলা লেখার’ হীন চক্রান্ত করে লক্ষ লক্ষ টাকা অপব্যয় করতেও এতটুকু লজ্জাবোধ করে নাই। বন্ধুগণ! যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কর্তৃপক্ষের এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবকে সমূলে বিনষ্ট করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম ক্ষান্ত হতে পারে না। অতএব, আসুন আমরা ১১ই মার্চ নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ও সভা করে আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে স্মরণ করে পুনরায় লৌহদৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করে বাংলাকে উর্দুর সাথে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষারূপে ঘোষণা করতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করি।’- (তথ্যসূত্র: প্রফেসর সালাউদ্দিন আহমেদ ও অন্যান্য ‘সম্পাদিত’ মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস, ১৯৪৭-১৯৭১)।