একুশ আমার অহংকার
দ: প্রতিবেদক
বাঙালি বড় বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি। নিজেদের ইতিহাস ভুলে বসে থাকে। কখনো বিকৃতও করে অহর্নিশি। বাঙালি বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে, শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে এমন কোন বিষয় নেই যা নিয়ে বাঙালি বিতর্ক করে না। সেই বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি হিসেবে আমরা একুশে ফেব্র“য়ারি পালন করি, উলাসে একে অভিহিত করি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে, কিন্তু আমরা সত্যই কি জানি একুশে ফেব্র“য়ারি দিনটির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হবার ইতিহাসটুকু?
বিগত নব্বই দশকের শেষ দিক। সবকিছুর পুরোধা ছিলেন রফিক (রফিকুল ইসলাম) নামের এক ক্যানাডা নিবাসী বাঙালি। চেহারা ছবিতে অসাধারাণ কিছু মনে হবে না দেখলে। চিরায়ত বাঙালি চেহারা, আলাদা কোন বিশেষত্ব চোখে মুখে নেই। কিন্তু যে কেউ একটু কথা বললেই বুঝবেন যে সাধারণ এই লোকটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক অমিত শক্তির স্ফুরণ। একসময় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, দেশ-মাতৃকাকে মুক্ত করেছেন না-পাক বাহিনীর হাত থেকে। তো এই লোকটি একুশে ফেব্র“য়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিণত করার সম্মুখ যোদ্ধা হবেন না তো কে হবেন?
১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে এক রফিক পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়ে একুশে ফেব্র“য়ারিকে অমর করেছিলেন। তার ৪৬ বছর পরে আরেকজন রফিক সুদূর কানাডায় বসে আরেক দুঃসাহসী কাজ করে ফেললেন ।
১৯৯৮ সালের ৯ই জানুয়ারী রফিক জাতিসংঘের তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারী কফি আনানকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে রফিক ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের অবদানের কথা উলেখ করে কফি আনানকে প্রস্তাব করেন ২১শে ফেব্র“য়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’হিসেবে যেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।