একীভূত হচ্ছে শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটকে একীভূত করে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন, ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শের-ই-বাংলা নগরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা শিশু হাসপাতালটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বিচ্ছিন্ন ও সীমিতভাবে দরিদ্র রোগাক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হত। পরবর্তীতে শিশুদের সার্বিক চিকিৎসার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঢাকা শিশু হাসপাতাল কোনো আইনগত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নয় জানিয়ে আনোয়ারুল বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ঢাকা শিশু হাসপাতাল অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করে।
নবম জাতীয় সংসদের বিশেষ কমিটির সুপারিশের আলোকে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় জারীকৃত ১২২টি অধ্যাদেশের মধ্যে ৫৪টি অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়, এর মধ্যে ঢাকা শিশু হাসপাতাল অধ্যাদেশ রয়েছে বলেও জানান আনোয়ারুল।
তিনি বলেন, ঢাকা শিশু হাসপাতালের কর্মকাÐ এবং বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত¡াবধানের বিধান সম্বলিত কোনো স্বয়সম্পূর্ণ আইন বা অধ্যাদেশ নেই। হাসপাতালটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে উক্ত অধ্যাদেশের আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন করা সমীচীন। ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটকে একীভূত করে ‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই আইন পাস হলে শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সুষ্ঠু পরিচালনা ও প্রশাসন সার্বিকভাবে একটি ব্যবস্থাপনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকবে। সরকার নিযুক্ত একজন চেয়ারম্যানসহ ১২ সদস্যের ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠিত হবে। বোর্ডের চেয়ারম্যান ও মনোনীত সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর।
আনোয়ারুল বলেন, একটি আইনের মাধ্যমে ঢাকা শিশু হাসপাতাল পরিচালিত হলে সর্বস্তরের শিশুদের উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ ও সবল জাতি গঠনে হাসপাতালটি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। এই আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের দ্বারা সরকার বিধি প্রণয়ন করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তাবিত শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সহযোগিতা চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্ব-সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির মেলবন্ধন জোরদার করার লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক চুক্তি সম্পাদন ও এর আওতায় সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে ৪৪টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে এই চুক্তি হলে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক কৃষ্টি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়া দুই দেশের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের মাধ্যমে শৈল্পিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উভয় দেশের জনগণের জ্ঞান ও সচেতনতা অর্জন; সভা, সেমিনার ও প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে উভয় দেশের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি।
আনোয়ারুল বলেন, চারুকলা, শিল্পকলা, শিল্প সংস্কৃতি ও সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের মাধ্যমে উভয় দেশের সংস্কৃতি সমৃদ্ধকরণ; প্রকাশনা, গবেষণা ও তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ; সামগ্রিকভাবে সংস্কৃতি, শিল্পকলা এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে এই চুক্তি করা হবে।
কোনো পক্ষ চুক্তি বাতিল করতে চাইলে চুক্তি বাতিলের তারিখের ছয় মাস আগে লিখিতভাবে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। এই চুক্তির বিষয়ে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মতামত নিতে হবে বলেও জানান তিনি।