একজন মাশরাফি আছেন বলে…
ক্রীড়া ডেস্ক
‘মাশরাফিকে যখন অধিনায়কত্ব দেওয়া হলো তখন বাংলাদেশের অবস্থা কী ছিল? মুশফিকের নেতৃত্বে তো সব ম্যাচই হারছিল। ১৫’র বিশ্বকাপের আগে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো, এর পরই না সব পাল্টাল। এখন আমরা অনেক দলকে হারাই। সেগুলো সম্ভব হয়েছে মাশরাফির দক্ষ দল পরিচালনায়। তাকে ছুঁড়ে ফেলার কিছু নেই। তাকে পূর্ণ সম্মান দিয়ে বিদায় দিতে হবে। বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার জাতীয় দলকে গড়ে তুলতে এতটা সম্পৃক্ত থাকেনি মাশরাফির মতো’ লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ভেতরে তানভীর নামের এক বাংলাদেশি এভাবেই মাশরাফিকে নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
কানাডা থেকে যিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তানের খেলা দেখতে লন্ডনে এসেছেন। তানভীরের কথা স্পষ্ট, ‘হাঁটুতে সাতটি অস্ত্রোপচারের পর মাশরাফি যেভাবে খেলেছেন, যেভাবে দলকে আগলে রেখে পরিচালনা করেছেন সেই কৃতিত্ব তাকে দিতে হবে। বর্তমান পারফরম্যান্স খারাপ। দল খারাপ করছে। সবই ঠিক আছে। কিন্তু যেই মানুষটা এতটা করল বাংলাদেশের জন্য তাকে কি সময় দেওয়া যায় না?’
কানাডা প্রবাসী তানভীর নিয়মিত বাংলাদেশের খেলা দেখে আসছেন। মাশরাফির খুব বড় ভক্ত নন। কিন্তু তার বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ বলে মাঠ থেকেই তা দেখতে এসেছেন। মাশরাফির জন্য লর্ডসে হাজির হয়েছেন আরো অনেকে। ‘মাশরাফি তুমি লাল সবুজের ভালোবাসা’- এমন প্ল্যাকার্ড নিয়ে খেলা দেখতে এসেছেন চার বন্ধু।
মাশরাফি ভক্ত চার বন্ধুর কন্ঠে এক সুর, ‘নেতিবাচক কোনো অনুভূতি নেই। প্রত্যেকটা খেলোয়াড় নিজের সর্বোচ্চ দেওয়া চেষ্টা করে। হয়তো কিছু ভুল হবেই। মাশরাফি ইজ দ্য মাশরাফি। মাশরাফির মতো আরেকজন অধিনায়ক পাওয়া খুব কঠিন। আশা করি খুব ভালো একটি সময়ে মাশরাফি অবসরে যাবেন। আপাতত বিশ্বকাপে তার বিদায়ী ম্যাচটার স্বাক্ষী হতে পেরে ভালো লাগছে।’
লর্ডসের ঐতিহ্যবাহী ড্রেসিং রুম থেকে বেরিয়ে অনার্স বোর্ড পেরিয়ে টস করতে নামলেন মাশরাফি। মাটি ছুঁয়ে ঢুকলেন ভেতরে। গ্যালারিতে তখন একটাই নাম, ‘মাশরাফি…মাশরাফি…মাশরাফি…।’
কিংবা ১১তম ওভারে যখন প্রথম বল হাতে দৌড়ালেন তখন মনে হচ্ছিল লর্ডস নয়, খেলা হচ্ছিল মিরপুরের ২২ গজে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাংলাদেশিরা মাশরাফির জন্য গলা ফাটাচ্ছে। হয়তো তাদের প্রত্যেকের চাওয়া বীর বেশে মাশরাফি বিদায় নিক বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে।