এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নাই, বললেন ক্ষুব্ধ ওবায়দুল কাদের
সম্মেলন অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রতি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ‘মনোযোগের ঘাটতিতে’ ক্ষুব্ধ ওবায়দুল কাদের তাদের সময়জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে তাদের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেছেন, এমন কর্মী তারা চান না।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের এই আয়োজনে ওবায়দুল কাদের ছিলেন প্রধান অতিথি, যিনি এক সময় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াও ছিলেন অনুষ্ঠানে,যারা বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে এসেছেন।
ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানে দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য দেওয়ায় সময় স্বল্পতার কারণে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আসা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অনেকে বক্তব্য দিতে পারেননি।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “অনেক তো নেতা আসছে, কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ- এই ছাত্রলীগ নয়।
“মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে, শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী হতে হবে। খাঁটি কর্মী বিশৃঙ্খলা করে না। সব নেতা হয়ে গেছে!”
এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নাই, বললেন ক্ষুব্ধ ওবায়দুল কাদের
কাদের বলেন, “আজকে নানকের (জাহাঙ্গীর কবির নানক) মত… আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সময়ের অভাবে বক্তব্য দিতে পারলেন না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরে কে বলবে না বলবে- এটা খেয়াল থাকে না।”
তিনি বলেন, “আজকে জুম্মার দিন কি না খেয়াল থাকে না! এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন, সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নাই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ দরকার নাই।
“বাহাউদ্দিন নাছিম কারা নির্যাতিত নেতা, আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; বক্তৃতা করতে পারে নাই। আমন্ত্রিত অনেকেই আজকে আওয়ামী লীগের মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক- তারা বক্তা ছিল। বক্তব্য দিতে পারে নাই। বিপ্লব (বিপ্লব বড়ুয়া) বক্তব্য দিতে পারে নাই। তাহলে দাওয়াত দিলেন কারা।”
ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার উদ্দেশে কাদের বলেন, “একটু একটু করেও বলতে পারল না। আপনারা দুজনের এক ঘণ্টা… মনে নেই আজ শুক্রবার। লেখকের না হলে মনে ছিল না, জয়ের কি মনে ছিল না?”
এ সময় কর্মীদের স্লোগান বন্ধ করতে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যার নামে স্লোগান দেবেন, তাকে নেতা বানাব না। নেত্রীকে বলে দেব। স্লোগান যার নামে হবে, সে বাদ।”
ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
অন্যদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।