এআইইউবিতে শুরু সিটিও ফোরাম ইনোভেশন হ্যাকাথন
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইিউবি) ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো সিটিও ফোরাম ইনোভেশন হ্যাকাথন ২০২২-এর তৃতীয় আসর।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ হ্যাকাথনের উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্যক্রমে সফটস্কিল অন্তর্ভুক্তি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে হ্যাকাথন অন্যতম অনুষজ্ঞ। এ কারণেই আমি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে হ্যাকাথনের অংশীদার হতে আহ্বান জানাই। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন নিয়মিত হ্যাকাথন আয়োজন করে। এতে করে কারিকুলামের বাইরেও বাস্তব দক্ষতা অর্জনের পথ উন্মুক্ত হবে।
সিজিপিএ নয়, দক্ষতা উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের উচিত হবে প্রবলেম সলভিং দক্ষতা উন্নয়নে পোস্ট গ্রাজ্যুয়েট, আইসিটি, কোডার্স এবং বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক কোর্সের দিকে নজর দেওয়া।
স্বাগত বক্তব্যে এআইইউবি উপাচার্য কারম্যান জেড লামাগনা আগামীতে ইনোভেশন হ্যাকাথনের অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আইসিটি বিভাগের সঙ্গে ২০১৬ সালে সর্বশেষ হ্যাকাথনে এআইইউবি উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। আমরা নিয়মিত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং ইভেন্টগুলিতে অংশগ্রহণ করি। তরুণ উদ্ভাবকদের উৎসাহিত করতে ইনোভেশন হ্যাকাথন নিঃসন্দেহে অনন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে হ্যাকাথনের উদ্দেশ্য বিষয়ে আয়োজক প্রাতিষ্ঠান সিটিও ফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকার জানান, বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট এবং ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের অংশ হিসেবেই এই আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রঅনুরোধে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এতে অংশগ্রহণের সময় বাড়ানো হয়েছে। সেদিন থেকেই শুরু হবে আইডিয়া রাউন্ড। ২৭ অক্টোবর ডেমো রাউন্ড। ১৫ নভেম্বর হবে চূড়ান্ত পর্ব। এবার তারা জাতীয় প্রয়োজনে ২১টি ক্যাটাগরিতে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে আনবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন, ক্যানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক, ফেয়ার গ্রুপের সিইও মোতাসিম দেওয়ান, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যে সনি, মারুবিনি’র মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো হাইটেক পার্কে তাদের কারখানা করতে যাচ্ছে এবং দক্ষ জনশক্তি খুঁজছে বলে জানান বিকর্ণ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, আশা করছি, অচিরেই মাইক্রোসফট, গুগলের মতো সিইও হবে বাংলাদেশের মাটি থেকেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ৪ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যেই এ সংখ্যা ২৫ হাজারে উন্নীত হবে। এখন আমাদের ১১টি হাইটেক পার্ক রয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৯২টি হবে। প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে ট্রেনিং এবং ইনক্রিমেন্ট সেন্টার তৈরি করা হবে।
ফেয়ার গ্রুপের ডিরেক্টর এবং সিইও মুতাসিম দাইয়ান বলেন, এ হ্যাকাথনের লক্ষ্য তরুণ অ্যাপ ডেভেলপারদের এমনভাবে গড়ে তোলা যেন তারা স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন অর্জন করতে পারেন।
ইনোভেশন হ্যাকাথন-২০২২ এর টাইটেল স্পন্সর ফেয়ার টেকনোলজি ও হুন্দাই বাংলাদেশ ব্র্যান্ড। আর হ্যাকাথনে সহযোগী হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ও এস্প্যায়ার টু ইনো ভেট (এটুআই) এবং বেসিস।
“ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব, সুস্বাস্থ্য, গুণগত শিক্ষা, ই-কমার্স, এমার্জিং টেকনোলোজি, ভার্চুয়াল এসিস্টেন্স, অনলাইন সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন”সহ এমন আরও মুক্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই হ্যাকাথন থেকে সেরা উদ্যোগগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।