উহানের হাসপাতাল পরিচালকেরও প্রাণ গেল নতুন করোনাভাইরাসে
নভেল করোনাভাইরাস ছড়ানোর কেন্দ্রস্থল চীনের উহানের একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালের প্রধান প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, উহানের উচাং হাসপাতালের পরিচালক লিউ ঝিমিং মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় মারা যান।
নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রাণ হারানো চীনের নামকরা চিকিৎসকদের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
ভাইরাসটি নিয়ে প্রথম সতর্ক করে তিরস্কৃত হওয়া চিকিৎক লি ওয়েনলিয়াং এ মাসের শুরুতে মারা যান। তার মৃত্যুতে লাখ লাখ চীনা শোক প্রকাশ করে।
চীনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী উহানের একটি সি ফুড (সামুদ্রিক খাবার) মাকের্ট থেকেই ভাইরাসটি প্রথম ছড়ায় বলে মনে করা হয়। এর সংক্রমণে উপসর্গ হয় অনেকটা ফ্লুর মত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ রোগের নাম দিয়েছে কোভিড-১৯।
এ পর্যন্ত ১৮৭৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে নতুন ধরনের এ করোনাভাইরাস। অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
চীনের হাজার হাজার চিকিৎসাকর্মী জীবন বাজি রেখে লড়াই করে যাচ্ছেন এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে। আর তাতে কারও কারও মৃত্যুও হয়েছে।
চিকিৎসক লির মৃত্যুর মত হাসপাতাল পরিচালক লিউয়ের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়েও সোমবার চীনা ইন্টারনেট জগতে বিভ্রান্তি ছিল।
রাতে হুবেই স্বাস্থ্য কমিশনের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে প্রথমে তার মৃত্যুর খবর দেওয়া হলেও পরে সংশোধনী পোস্টে তার জীবিত থাকার কথা বলা হয়।
আগের ভুলের জন্য সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত নন লিউয়ের এমন এক ঘনিষ্ট বন্ধুকে দায়ী করে দ্বিতীয় পোস্টে বলা হয়, “লিউয়ের স্বজনদের তথ্যমতে, হাসপাতাল তাকে বাঁচানোর জন্য এখনও যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।”
তবে মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন লিউয়ের মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়ার পর কমিশন আর কোনো বার্তা দেয়নি।
এর আগে ২০০৩ সালে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম (সার্স) প্রাদুর্ভাবের সময় বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে রাখঢাক করার অভিযোগ উঠেছিল।
নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে বেইজিংকে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীনের এক জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শুক্রবার জানান, দেশটির এক হাজার ৭১৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী নতুন করোনভাইরাসে আক্রান্ত, যাদের মধ্যে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।