উপসর্গ দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
বিশ্বজুড়ে মহামারীর রূপ নেওয়া নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) যে কোনো উপসর্গ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর’ কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী পরিছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে গত রোববার তিনজন কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হয়নি বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আক্রান্ত তিনজনও সুস্থ হওয়ার পথে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সেই ক্ষেত্রে আমি বলব আমাদের এখানে যদি কেউ কখনও মনে করেন যে এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বা তার কোনোরকম নমুনা দেখা দিচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং আমরা প্রতিটি জেলা-উপজেলায়ও আমাদের চিকিৎসাকেন্দ্র বা হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রেখেছি।
“কোনো রকম উপসর্গ দেখা গেলে সেটা না লুকিয়ে রেখে সাথে সাথে ডাক্তার দেখানো এবং পরামর্শ নেওয়া, চিকিৎসা নেবেন আপনারা। সেটা আমরা চাই।”
আইইডিসিআর থেকে প্রতিনিয়ত দেশবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সচেতনতামূলক যে সমস্ত নির্দেশনা আসছে সেটা সবাইকে মেনে চলতে হবে। তাহলেই আমরা কিন্তু আমাদের দেশটাকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারব।
“যারা বিদেশ থেকে আসবে সাথে সাথে অনুরোধ করব যেসব দেশে এই ধরনের ভাইরাস দেখা গেছে, তারা নিজেরা অন্তত বাইরের কারো সঙ্গে মিশবেন না এবং কিছুদিন অপেক্ষা করে দেখবেন এই রোগের কোনোরকম লক্ষণ দেখা যায় কিনা। যদি লক্ষণ থাকে সাথে সাথে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া…কারণ একজনের জন্য আরেকজনের মধ্যে ছড়াতে পারে। এই বিষয়টার দিকে সবার নজর রাখতে হবে।”
বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, “করোনা ভাইরাসটা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে এখানে হয়তো মৃতের সংখ্যা তেমন না, কিন্তু আতঙ্ক অনেক বেশি। সেই ক্ষেত্রে আমি সবাইকে বলব এখান থেকেও আমাদের দেশকে মুক্ত রাখতে হবে।
“ইতিমধ্যে আমরা বিদেশ থেকে আসা আমাদের দুইজন নাগরিককে শনাক্ত করেছি। তাদের চিকিৎসা করা হয়েছে, তারা মোটামুটি ভালো এবং একজন সংক্রমিত হয়েছিল। এছাড়া বাকি আমরা সবাই ভালো আছি। কিন্তু এই ভালো থাকলেই চলবে না। ভালো সবাইকে রাখতে হবে। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।”
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে চলতে চাই। সেটা করতে গেলে আমাদের যেটা করতে হবে, দেশকে আমাদের গড়ে তুলতে হবে সুন্দরভাবে। আর এই সুন্দরভাবে দেশ গড়ে তুলতে গেলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের সকলের জন্য প্রয়োজন।
“নিজেরা যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকেন তাহলে আশপাশের মানুষগুলো ভালো থাকতে পারবে না বা রোগ-শোক, বালাই এগুলো সবসময় দেখা দেবে।”