উপজেলায় চতুর্থ ধাপে ভোটের হার নেমে এল ৩৬ শতাংশে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
প্রথম তিন দফায় ভোটের হার ৪০ শতাংশের উপরে থাকলেও চতুর্থ দফায় তা ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রোববার চতুর্থ দফায় ১০৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের পর সোমবার নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটের হার জানা যায়। ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, চতুর্থ ধাপে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮১ জন ভোটারের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০ লাখ ৫৪ হাজার ৬১৫ জন ভোট দিয়েছেন। এটা মোট ভোটারের ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যে চলমান উপজেলা নির্বাচন ‘জৌলুসহীন’ হয়ে পড়ার পর ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতিও কম। প্রথম ধাপে ভোটের হার ছিল ৪৩ দশমিক ৩২ শতাংশ; দ্বিতীয় ধাপে তা কমে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ২৫ শতাংশে। তৃতীয় ধাপে সামান্য বেড়ে ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশে গেলেও পরের ধাপে ভোটের হার ৪ শতাংশ পয়েন্ট কমল।
সব মিলিয়ে চার ধাপে গড়ে এবার ভোট পড়েছে ৪১ শতাংশ। আগামী ১৮ জুন পঞ্চম ধাপে ৩০টির মতো উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত আগের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হওয়ার জন্য সব দলের অংশগ্রহণ না হওয়াকে কারণ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে ইসি। তবে তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই তাদের; সহিংসতা কম হওয়ায়ই সন্তুষ্ট তারা। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রোববার চতুর্থ দফার ভোট শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে গেলে অনিয়ম বাড়ত। “প্রতিটি ধাপে আমরা চেয়েছি ভোট যেন শান্তিপূর্ণ হয়; প্রাণহানি যেন না হয়; অনিয়ম যাতে না হয়। চার ধাপে একজনেরও প্রাণহানির ঘটনা হয়নি; এতে কমিশন সন্তুষ্ট।” এ ধাপে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় শতকরা ৭০ দশমিক ৮২ শতাংশ। এই উপজেলার এক লাখ আট হাজার ৩৫৭ জন ভোটারের মধ্যে ৭৬ হাজার ৭৪২জন ভোট দেন। সব থেকে কম ভোট পড়েছে ফেনী সদর উপজেলায়। এই উপজেলায় ইভিএম এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। সেখানে তিন লাখ ৪৮ হাজার ২৫৯ জন ভোটারের মধ্যে ৪৭ হাজার ১৮ জন ভোট দেন। ভোটের হার ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। প্রথম চার ধাপে ৪৬৫ উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও ভোট হয়েছে ৪১৮টিতে; একক প্রার্থী থাকায় ৩০টি উপজেলায় ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। বাকি ১৭ উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়। এর মধ্যে ১০টি আদালতের আদেশে এবং ৭টি ইসির আদেশে স্থগিত হয়েছে। নৌকার ২৮৮ ও স্বতন্ত্র ১৩১ বিএনপি ভোটে না থাকায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্ধীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকায় ভোট করে ২৮৮ জন উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ১৩১ জন জিতেছেন চেয়ারম্যান পদে, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা। চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগের ৭৩ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে ৪৯ জন ভোটে ও ২৪ জন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায়। জাতীয় পার্টি-জেপি থেকে চেয়ারম্যান পদে একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩২ জন ভোটে জিতেছেন চতুর্থ ধাপে। তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৮৩ জন (এর মধ্যে ভোটে জিতেছেন ৫২ জন, বাকিরা বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায়), জাতীয় পার্টির একজন, স্বতন্ত্র ৩৮ জন নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৭৪ জন নির্বাচিত হন; এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ২৩ জন। জাতীয় পার্টির ২ জন ও স্বতন্ত্র ৩৮ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দ্বিতীয় ধাপে। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৫৮ জন নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে; এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ১৬ জন। আর ২৩ উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।