উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে আগেভাগে কিছু বলতে নারাজ চীন
জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া নতুন কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা করুক, তা দেখতে চায় না বেইজিং; এই চাওয়ার অংশ হিসেবেই চীন পিয়ংইয়ংয়ের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাল্টায় জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে প্রস্তাব এসেছিল তাতে ভিটো দিয়েছে।
তবে উত্তর কোরিয়া যদি ২০১৭ সালের পর প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েই বসে, তাহলে চীন জাতিসংঘে কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা নিয়ে পূর্বানুমান করার ব্যাপারেও সাবধান করেছেন তিনি।
পিয়ংইয়ংয়ের নতুন পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা ‘যে কোনো সময়’ হতে পারে বলে গত কিছুদিন ধরেই ওয়াশিংটন সতর্ক করে আসছে; এমন কোনো পরীক্ষা হলে জাতিসংঘকে আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে চাপ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
“দেখা যাক, কী হয়। কিন্তু আমাদের উচিত নয় পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা করা। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চীনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আমরা আরেকটা পরমাণু পরীক্ষা দেখতে চাই না,” জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে চীন-রাশিয়ার ভিটোর দুই সপ্তাহ পর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ঝ্যাং।
২০০৬ সালে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরুর পর বেইজিং-মস্কোর ভিটো প্রথমবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে।
আগে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অর্থায়ন বন্ধের লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদকে সর্বসম্মতিক্রমে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে দেখা গেছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও রাশিয়া মানবিক কারণে এবং পিয়ংইয়ংকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ফেরানোর আশায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য চাপ দিয়ে আসছে।
“কেবল আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতির উন্নতি দেথছি আমরা। নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে মনে করছি। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট- নিষেধাজ্ঞা সমস্যার সমাধান করে না,” বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
উত্তর কোরিয়া এ বছর কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার মধ্যে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রও আছে।
ঝ্যাং পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে ফের আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনকে উত্তর কোরিয়ার ওপর দেওয়া তাদের একতরফা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একের পর এক চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু পূর্বশর্ত ছাড়া তাদের আলোচনার প্রস্তাবে পিয়ংইয়ংয়ের দিক থেকে কোনো সাড়াই পাওয়া যায়নি।
“যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও আলোচনায় বসতে বলেছি। আমরা আমাদের উত্তর কোরিয়ার বন্ধুদেরকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বসতে বলেছি,” বলেছেন ঝ্যাং।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু ‘মিশন ইমপসিবল’ নয়।
“যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি। তারা যদি বিশ্বের কারও সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়, তাহলে এটা কঠিন কিছু নয়। আলোচনা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার উত্তর কোরিয়ার, কিন্তু আমাদের চাওয়া হচ্ছে এটাই,” বলেন ঝ্যাং।