ঈদ উল ফিতরে নিরাপত্তার চাঁদরে থাকবে খুলনা শহর
* মতবিনিময় সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
দ: প্রতিবেদক
আসন্ন ঈদ উল ফিতরকে কেন্দ্র করে ঈদের আগে ও পরে খুলনা শহরে চার স্তরের নিরাপত্তা (পোশাকী পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও হুন্ডা মোবাইল) ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে করে মার্কেট, শপিংমল, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন এবং পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। এসময়টাতে পুরো খুলনা শহর থাকবে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তর সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকের সাথে কেএমপি কর্তৃক গৃহিত নিরাপত্তা বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বিপিএম।
সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, নগরীরর বিভিন্ন বিপণী বিতানে নগরবাসী যাতে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে নির্বিঘেœ নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারে, সে জন্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞান পার্টি, চোর ও ছিনতাইকারী ধরতে গোয়েন্দা নজরদারিও করা হচ্ছে। বিশেষ করে কোন প্রকারের ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি, মহিলা পকেটমার ও অজ্ঞান পার্টি রোধ করার জন্য মহিলা পুলিশ বিশেষভাবে তৎপর থাকবে। যদি কেউ এসবের চেষ্টা করে, তাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য খাদ্য বিষক্রিয়া রোধকল্পে কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার যাতে ঝামেলা মুক্তভাবে বেচাকেনা করতে পারে, সে জন্য ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে। নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে যানজট মুক্ত রাখা হয়েছে। ব্যাংক ও ব্যবসায়ীগণ টাকা-পয়সা স্থানান্তর করার জন্য পুলিশ সহায়তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা সচল আছে। ঈদের ছুটিতে দুই প্লাটুন কিউআরটি টিম (কুইক রেসপন্স টিম) মোতায়েন থাকবে।
তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে পরিবহন সেক্টরে কোন প্রকার চাঁদাবাজির সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিটি বাস ছাড়ার আগে যানবাহনের প্রয়োজনীয় সনদপত্রের পাশাপাশি গাড়ী চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার পর গাড়ী ছাড়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রেল স্টেশনে যাতে টিকিট কালোবাজারি না হয়, তার গোয়েন্দা নজরদারী রাখা আছে।
সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে থানা অফিসার ইনচার্জদের শহরে ভাড়াটিয়া তালিকা হাল নাগাদ করার জন্য বলা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা শহরে পুলিশের পাহারা থাকবে, বাসাবাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মী থাকবে।
ঈদের জামাতে নিরাপত্তার স্বার্থে মুসলিদের ঈদগাহ ময়দানে জায়নামাজ ও টুপি ব্যতিত কোন প্রকারের ব্যাগ বহন করতে নিষেধ করা হয়েছে। ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, আর্চওয়ের ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘খুলনায় নাশকতার কোনো আশঙ্কা ও সুযোগ নেই। এ জন্য আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে’।
মতবিনিময় সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (আরসিডি) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।