November 27, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ঈদের পরেই ইউপি নির্বাচন!

মে মাসে সারাদেশে ইউপি নির্বাচনের পরিকল্পনা
সংঘাত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না : সিইসি

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পৌরসভা নির্বাচনের পাট গুছিয়ে রোজা শেষে আগামী মে মাসে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান। পৌরসভা নির্বাচনে চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের ভোট রয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি ও ২৮ ফেব্রুয়ারি। মার্চে হালনাগাদে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর রমজান রয়েছে।
সিইসি বলেন, শেষ ধাপের বাদ বাকি পৌরসভা ও নির্বাচন উপযোগী কিছু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ৭ এপ্রিল করার প্রস্তাব এসেছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি কমিশন সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। ক’টি পৌরসভা ও ইউপি ভোট করা যায়, তা পর্যালোচনা হবে এ সময়।
দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপি রয়েছে। পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে ২২ মার্চ থেকে জুন পযন্ত ছয় ধাপে চার হাজারের বেশি ইউপির ভোট হয় দলীয় প্রতীকে। এবারও দলীয় প্রতীকে ভোট হবে।
কবে নাগাদ বেশিরভাগ ইউপিতে ভোট হবে- জানতে চাইলে নূরুল হুদা বলেন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত প্রকাশের বিষয়, সিডি তৈরি ও রমজান রয়েছে। ৭ এপ্রিল কিছু হবে। তবে ঈদের পরে মধ্য মে মাসে ইউপি নির্বাচন শুরু হবে। পাঁচ বছর আগে মার্চের শেষ সপ্তাহে ভোট শুরু করে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ছয় ধাপে ভোট হয় ইউপির।
কে এম নূরুল হুদা চলমান পৌরসভা নির্বাচনের সংঘাত প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোথাও কোথাও ভোটে সংঘাত হয়। এগুলো চলে গেলে খুশি হবো, কিন্তু যাচ্ছে না। আজকেও আমরা চট্টগ্রাম, যশোরে কথা বলেছি। ১৪ তারিখ ভালোবাসা দিবসের নির্বাচনকেও ভালোবেসে ফেললাম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে যা যা দরকার আমরা সব ঠিকভাবে দেখেছি। আশা করি, অন্তত এরপর থেকে যে নির্বাচন হবে, ভালো হবে। সুষ্ঠু হবে; সংঘাত-সংঘর্ষ হবে না। ’
বিগত নির্বাচনগুলোতে রক্তপাত, সহিংসতা কেন ঠিক করা গেলো না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এত সংঘাত হয়েছে তা না। তবে যেগুলো হয়েছে, আমাদের কাম্য নয়। এগুলো হয় প্রার্থী ও প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিদের মধ্যে। আমাদের পুলিশ থাকে, কিন্তু একটা ঘটনা ঘটে গেলে তো কিছু করার থাকে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য থাকে, ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। তারপরও এগুলো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়। প্রার্থী ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সহনশীল থাকতে হবে। আর আমাদের প্রচেষ্টা তো আছেই। তবে এটাকে ঢালাওভাবে বলবেন না। ব্যাপকভাবে হয়েছে তা নয়। সারা নির্বাচনের মধ্যে তিন-চারটি জায়গায় এমন হয়েছে। আমরা সেটাকে সামাল দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে যেখানে অসুবিধা হয়েছে সেখানে পুলিশি মোকদ্দমা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি থাকবে, এগুলো যাতে না হয়। এগুলো তো দুর্ঘটনা, আমাদের দেশে এগুলো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি থাকলে বলবেন। ’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য কোনো বার্তা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা তাদের অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রাখি। প্রত্যেকটি জায়গায় র‌্যাব, বিজিব, আনসার সদস্য আছে। প্রত্যেক কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৮ জন আর্মড পুলিশ এবং আনসার নিয়োজিত থাকবে। তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনাররা কথা বলেছেন। তারা আরো সুষ্ঠুভাবে তদারকি করবে। আগামী ১৪ তারিখ যে নির্বাচন আছে, সেগুলো তারা মনিটর করবে। কোনো জায়গায় খারাপ খবর পেলে, কমিনাররা কথা বলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।’
২০০৯ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে ২৯ ধারায় পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কার্যকাল বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হতে পাঁচ বছর মেয়াদ থাকবে পরিষদের। পরিষদ গঠনের জন্য কোনো সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্য কোনো কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *