ঈদুল ফিতরে বিল-বেতন-বোনাস নিয়ে উৎকন্ঠায় পাটকল শ্রমিকরা
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে অর্ধ লাখ শ্রমিক
দ: প্রতিবেদক
খুলনা-যশোর অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। আর কত আন্দোলন কর্মসূচি করলে তাদের শ্রমের মজুরী পরিশোধ করবে বিজেএমসি। শ্রমিকদের ১২ থেকে ১৩ সপ্তাহের মজুরী, কর্মচারীদের ৪ মাসের বেতন, জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গত ৫ মে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনে নামে খুলনা যশোরের ৯টি পাটকলের প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক।
মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে দুই দিন পর শ্রমিকরা বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা সড়কের বিভিন্নস্থানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা সড়কের উপর দুই ওয়াক্তের নামায এবং ইফতারি করছে। টানা ৯ দিন (শুক্রবার বাদে) মিলের চাকা বন্ধ, ৭ দিন সড়ক ও রেলপথ অবরোধ, সড়কের উপর অবস্থান, টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে বিক্ষোভ, রোজাদার শ্রমিকরা সড়কের উপর নামায আদায় এবং ইফতারি করছে। পাটকল শ্রমিকলীগ ও সিবিএ, নন-সিবিএ নেতারা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে এনে চিড়া, গুড়, মুড়ি, শরবত দিচ্ছে রোজাদার শ্রমিকদের। গতকাল ৯ম দিনেও মিলের উৎপাদন বন্ধ ছিল। সকালে শ্রমিকরা মিলগেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং বিকাল ৪টায় খুলনা যশোর মহাসড়কের তিনটি স্থানে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
এদিকে আন্দোলন আরো জোরদার এবং পাট শিল্পকে রক্ষা করতে ৯ মিলের শ্রমিকদের নিয়ে যুব পাট শিল্প রক্ষা কমিটি গঠন করেছে। প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মোঃ নূর ইসলামকে আহবায়ক ও জেজেআই জুট মিলের শমসের আলমকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়েছ। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন অলিয়ার রহমান, মানিক পাভেজ, আজগর মোল্যা, মোঃ শাজাহান, আঃ রাজ্জাক, শফিকুল ইসলাম, মনির হোসেন, মোঃ রাশেদ, মনোয়ার হোসেন, আঃ রাজ্জাক, মোঃ ইউনুস, মোফাজ্জেল হোসেন, ফজর আলী, খায়রুল মল্লিক, মোঃ পিপলু, নাজমুল, সাব্বির, নান্নু, ইসমাইল। এ যুব কমিটি ৯ দফা দাবির পাশাপাশি তাদেরও ৬ দফা বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানান যুব কমিটির আহবায়ক মোঃ নূর ইসলাম।
অব্যাহত আন্দোলনে এবার শিল্প এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। বিল না পেয়ে এবং বিজেএমসির নিরব ভুমিকায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা পর্যক্রমে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। শ্রমিকদের হাতে টাকা নেই, পেটে ভাত নেই, বকেয়া মজুরীর পাশাপাশি সমাগত ঈদুল ফিতরে বোনাস পাবে কি না এমন ভাবনা বয়ে বেড়াচ্ছে শ্রমিকরা। ফলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে পারে আর এ কারনে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছে শিল্পাঞ্চলবাসী।