November 28, 2024
জাতীয়

ইসির হাতে আরও ক্ষমতা চান মাহবুব তালুকদার

স্থানীয় সরকারের নির্বাচন ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সংস্কার করে ইসির হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

চলমান উপজেলা নির্বাচন জৌলুস হারানোর পর সব দলের অংশগ্রহণ ও ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে এ প্রস্তাব করেছেন তিনি।

সোমবার দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা ভোট চলার মধ্যে বিকালে নির্বাচন ভবনের নিজ কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন মাহবুব তালুকদার।

সংবাদ সম্মেলনে বরাবরের মতো লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করলেও ‘নির্বাচন কী পদ্ধতিতে, কখন-কীভাবে হবে’ তা নিয়ে এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ইসির কাজ নয়; রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।

তিনি বলেন, “স্থানীয় নির্বাচন কী পদ্ধতিতে কতখানি উন্মুক্ত হবে সেটা বর্তমানে সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য, আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে, সব দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।”

এজন্য ইসির হাতে ক্ষমতা চেয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে-এ সিদ্ধান্ত ইসির কাছে ন্যস্ত হলে ভোটারদের উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না

“বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।”

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের প্রসঙ্গ টেনে মাহবুব তালুকদার বলেন, “বিগত কয়েকদিন ধরে কয়েকজন সাংবাদিক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে আমার কাছে প্রশ্ন রাখছেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। একাদশ সংসদ নির্বাচন কেমন হয়েছে প্রতিটি বিবেকমান মানুষের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে।”

তার মতে, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত তারা কখনও এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দেবেন না।

‘নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে’ সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মাহবুব তালুকদার বলেন, “মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি হতে পারে না।”

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে প্রশ্ন

এবারের উপজেলা নির্বাচনে শতাধিক ব্যক্তি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে  মাহবুব তালুকদার বলছেন, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে?

তিনি বলেন, “আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না।

“আমার মতে নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিকের মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা নির্বাচন হয় কী করে? প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইংরেজিতে ইলেকটেড না বলে সিলেকটেড বলা যেতে পারে কী।”

মাহবুব তালুকদার জানান, এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তি চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। পরবর্তীতে আরও ৫০ জন সম্ভবত বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হবেন।

“প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।”

এবারের উপজেলা নির্বাচনের বিষয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, “আইনে থাকলেও বাস্তবে এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয়ভাবে। এ নির্বাচনের স্বরূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়?”

অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় এ নির্বাচনের জৌলুস নেই- এই মন্তব্য আবারও করে তিনি বলেন, “এ নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর‌্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।”

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *