ইসির সঙ্গে সংলাপে যাচ্ছে না বিএনপি
দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবে না বিএনপি। তাদের পর্যবেক্ষণ, ইসি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে না, তাই সংলাপ করে কোনো লাভ নেই। দলের এ সিদ্ধান্তের কথা বুধবার (২৯ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাতে বিএনপির ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।স্থায়ী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, বৈঠক শুরুতে নির্বাচন কমিশন থেকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গ তুলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চিঠির বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে স্থায়ী কমিটির সদস্যের মতামত জানতে চাওয়া হয়। তখন সদস্যরা নির্বাচন কমিশন সংলাপে অংশ না নেওয়ার মতামত দেন। তবে, স্থায়ী কমিটির কোনো-কোনো সদস্য নির্বাচন কমিশন সংলাপের চিঠির জবাবে লিখিতভাবে- সরকার পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়কসহ বিএনপির ১০ দফা দাবিগুলো জানানোর পক্ষে মত দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈঠক সিদ্ধান্ত হয়, বিএনপির সংলাপেও অংশ নেবে না ও কোনো চিঠিও দেবে না। এছাড়া বৈঠকে রাজনীতিবিদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন নিয়েও কথা হয়েছে। সেখানে স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্য এই ইফতার না করার পক্ষে মতামত দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন কমিশন সংলাপে অংশ নেওয়ার বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক নেওয়া সিদ্ধান্ত আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে করে জানাবেন দলের মহাসচিব।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিএনপি স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, সরকারের কথার বাইরে নির্বাচন কমিশন কোনো কাজ করতে পারে না, এটা সবাই জানে ও বোঝে। ফলে, নির্বাচন কমিশন সঙ্গে সংলাপে যাওয়া অর্থহীন। আর নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিবকে। তাই দল থেকে চিঠির জবাব দেওয়ারও কিছু নেই।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
গত ২৪ মার্চ বিএনপিকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে চিঠি দেন সিইসি। এরপর সোমবার (২৬ মার্চ) এক ইফতার অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আবার সংলাপে নাটক করে। নির্বাচন কমিশন সংলাপের জন্য আমাদের চিঠি পাঠায়। আমরা তো বলেছি, সংকট একটাই—নির্বাচন কীভাবে হবে, কোন ব্যবস্থায় হবে। নির্বাচন অবশ্যই একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কথা বললে সেই বিষয়ে কথা হবে, অন্য কোনো বিষয়ে কথা নয়।