ইসলাম নিয়ে মন্তব্যের জেরে ম্যাক্রোঁকে ডিম নিক্ষেপ?
মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে সমর্থন এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। মুসলিমরা তো বটেই, অন্য ধর্মের শান্তিপ্রিয় মানুষেরাও ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দেয়ায় এ নেতার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও চলছে ম্যাক্রোঁবিরোধী বিক্ষোভ। অনেক দেশেই পোড়ানো হয়েছে ফ্রান্সের জাতীয় পতাকা ও ম্যাক্রোঁর কুশপুতুল। জুতার মালা গলা পরিয়ে, ছবি পায়ে মাড়িয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ক্ষুব্ধ মুসলিমরা।
বিশ্বজুড়ে এমন তোপের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ফরাসি প্রেসিডেন্টের মুখে ডিম নিক্ষেপের একটি ভিডিও। এতে দেখা যায়, চারপাশে নিরাপত্তাকর্মী ও সমর্থকদের ভিড়ের মধ্যেই আচমকা ম্যাক্রোঁর মুখে একটি ডিম এসে পড়েছে আর ডিমের কুসুম ছড়িয়ে পড়ছে তার পুরো মুখজুড়ে
গত কয়েকদিনে অনেকেই ডিম নিক্ষেপের এ ঘটনাকে মহানবী (স)-কে অপমানের জবাব দাবি করে ফেসবুক-টুইটারে শেয়ার করেছেন। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে জানিয়েছে, এর সঙ্গে ম্যাক্রোঁর সাম্প্রতিক মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্যের কোনও যোগসূত্র নেই।
প্রকৃতপক্ষে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ২০১৭ সালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের ঘটনা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৭ সালের মার্চে প্যারিসে আয়োজিত একটি কৃষি প্রদর্শনীতে এক বিক্ষোভকারীর হাতে ডিম হামলার শিকার হয়েছিলেন এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ।
অবশ্য এ ফরাসি নেতার গায়ে ডিম নিক্ষেপের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০১৬ সালেও প্যারিসে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা তার দিকে ডিম ছুড়েছিল।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মুসলিমদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ এবং ‘ইসলাম বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন এক ধর্ম’ মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। এর কিছুদিন পর ক্লাসরুমে মহানবী (স)-এর বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের পর এক শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করেন এক মুসলিম যুবক।
এ ঘটনার জেরে ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, তার দেশ মহানবী (স)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করবে না। পরে দেশটির দু’টি সরকারি ভবনে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় করে সেই বিতর্কিত ছবি দেখানো হয়।
এরপরই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা মুসলিম বিশ্বে। প্রিয়নবীকে অপমানের জবাবে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। দেশে দেশ ছড়িয়ে পড়ে ফ্রান্স বয়কটের ডাক। এমনকি, ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিও উঠেছে অনেক জায়গায়।