ইরাকের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের
মার্কিন সেনাদের বের করে দেওয়ার বিষয়ে ইরাকের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হওয়ার পর বাগদাদের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান ‘এয়ার ফোর্স ওয়ানে’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প এ হুমকি ব্যক্ত করেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিবিসি জানিয়েছে, ইরাকি পার্লামেন্টে পাস হওয়া প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “সেখানে আমাদের অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি বিমান ঘাঁটি আছে। যা নির্মাণ করতে শত শত কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। এর মূল্য পরিশোধ না করা পর্যন্ত আমরা সেখান থেকে সরছি না।”
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র বাগদাদ বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে হত্যা করে। এরপর থেকে ওই অঞ্চলে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ‘চরম প্রতিশোধ’ নেওয়ার অঙ্গীকার জানিয়েছে ইরান।
এই ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন সেনাদের দেশ থেকে বের করে দিতে একটি প্রস্তাব পাস করে ইরাকের পার্লামেন্টে।
পার্লামেন্টে পাস হওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “সরকারকে যে কোনো বিদেশি সেনার ইরাকে অবস্থানের ইতি অবশ্যই টানতে হবে। বিদেশি সেনাদের কোনো কারণেই ইরাকের মাটি, আকাশ ও নৌপথ ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।”
এতে আরও বলা হয়, আইএসবিরোধী যুদ্ধে সহায়তার জন্য ইরাকি সরকার বহুজাতিক বাহিনীর প্রতি যে অনুরোধ জানিয়েছে, তা ফেরত নিতে হবে।
এছাড়া ইরাকের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ জানাতেও সরকারকে পার্লামেন্ট সদস্যরা বলেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্টের বিমানে এ নিয়ে কথার সময় ট্রাম্প বলেন, “ইরাক যদি অবন্ধুসুলভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীগুলোকে চলে যেতে বলে তবে তাদের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবো যা তারা কখনোই দেখেনি। এর কাছে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোও নিরীহ মনে হবে।”
২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতে বহুজাতিক বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ইরাকে ঘাঁটি গাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা। ২০০৭ সালে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়ে ধাপে ধাপে অধিকাংশকে ফিরিয়ে আনা হলেও এখনও সেখানে পাঁচ হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে।
আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সৈন্যরা ইরাকে থাকলেও তারা সরাসরি অভিযানে নেই।
পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই প্রস্তাব মানা ইরাকি সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে দেশটির শিয়াপ্রধান সরকারের প্রধানমন্ত্রী আদেল আল মাহদি দ্রুত বিদেশি সেনা উপস্থিতি কমানোর জন্য এর আগে পার্লামেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, মূলত শিয়া পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটেই পাস হয়েছে প্রস্তাবটি, সুন্নি ও কুর্দি সদস্যদের বেশিরভাগই পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বর্জন করেছিলেন।