ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস শেখ হাসিনার
ইভিএমে ‘অল্প সময়ে’, ‘সহজে’ ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের শুরুতেই সিটি কলেজ কেন্দ্র গিয়ে প্রথম ভোটটি দেন সরকার প্রধান। স্বল্প সময়ের মধ্যেই ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
ভোট শুরুর মিনিট পাঁচেক আগেই প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সিটি কলেজ ভোট কেন্দ্রে পৌঁছান। তিনি গাড়ি থেকে নামার পর পা ছুঁয়ে সালাম করেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপস।
কিছু সময় তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে শেখ হাসিনা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য লিফটে চড়েন।
ভোট দিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ইভিএম মানে ডিজিটাল পদ্ধতি। যার যার ভোট স্বাধীনভাবে দিতে পারবে। এই যে আমি দিলাম।…ইভিএমের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে অত্যন্ত সহজে ভোট দিলাম। আমি মনে করি, সমগ্র বাংলাদেশে এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন আমাদের নির্বাচন কমিশন। যাতে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়। কেউ যাতে যাতে কারও ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। লুকোচুরি কিছু নেই। এই জায়গাটায় শঙ্কাটা কেন? শঙ্কাটা হচ্ছে, গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে সিল সিলে মেরে বাক্স ভরে দিত সেটা আর সুযোগ আর নেই।”
শুরু থেকেই ইভিএমের বিরোধিতা করে আসা বিএনপি বলে আসছে, কারচুপির সুযোগ তৈরি করতেই ‘সরকারের ইচ্ছায়’ নির্বাচন কমিশন এ যন্ত্র ভোটারদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতেই তারা ইভিএম চায়, কারণ তাদের ভাষায় ‘জবর দখল ও জাল ভোটের সুযোগ ইভিএমএ নেই’।
ইভিএমে নিজের ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “ঠিক করেছিলাম প্রথম ভোটটা দেব। আমি কয়েক মিনিট আগে এসেছি। সেখানে অপেক্ষা করলাম। ৮টা বাজার সাথে সাথে মেশিনটা অন হল।
“আমি আমার আইডি কার্ড দিলাম। আঙুলের ছাপ দিলাম। আমার ভোটের জায়গায় ভোট দিলাম। তার আগে মেশিন দেখালো সেখানে কোন ভোট হয়নি। সম্পূর্ণ জিরো ভোট। সেটা এজেন্টেদের দেখানো হলো। এখানে ভোট ভরে রাখা যায় না। এরপরেও তাদের শঙ্কাটা কী? তাদের ভোট চুরির অভ্যাস প্রয়োগ করতে পারবে না এটাই তাদের (বিএনপি) শঙ্কা।“
ইভিএম নিয়ে বিএনপির শঙ্কা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “মানুষ যখন আস্থা হারায় বিশ্বাস হারায় তখন তারা নানা পথ নেয়। আর এটা বিএনপির চরিত্র। বিএনপির জন্মটাই অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি এদেশে শুরুই করেছিল তারা।
“বিএনপির আমলে প্রচলিত ছিলো, ১০টা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। এ রকমই অবস্থা ছিল। তারা গুণ্ডা বাহিনী আনবে সন্ত্রাসী আনবে এটাতো তাদের চরিত্রগত অভ্যাস। জনগণের ওপর তারা কিছুতেই আস্থা রাখতে পারে না।”
বিএনপি ডিজিটাল পদ্ধতির ওপর আস্থা রাখতে পারে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা জানে যে এই পদ্ধতিতে ভোট চুরি, কারচুপি করা কঠিন। সুযোগ না পেলেই এ সমস্ত হুলিগানিজম, গুণ্ডামি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে চায়। আমি বলব, এ পথ পরিহার করে জনগণের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হতে।”
হাসিনা বলেন, “ভোটের মধ্য দিয়েই মানুষ তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। আমি আমা করি আমাদের দুই প্রার্থী… আমি ফজলে নূর তাপসকে ভোট দিলাম। উত্তরে আমাদের প্রার্থী আতিক, আশা করি তিনি জয়যুক্ত হবে। ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হয়ে পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তুলব।
“আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব তারা যেন সজাগ থাকে। যাতে প্রত্যেকটটা ভোটার শান্তিমত পছন্দমত ভোট দিতে পারেন।”