ইন্দোনেশিয়ায় পাচারকারী চক্রের হাত থেকে ১৯৩ বাংলাদেশি উদ্ধার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সুমাত্রা দ্বীপের মেইডেনে মানব পাচারকারী চক্রের হাত থেকে ১৯৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেখানকার এক দোকান ভবনে গিয়ে তাদের বন্দি অবস্থায় পাওয়া যায়। অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় পাঠানোর লোভ দেখানো হয়েছিল ওই বাংলাদেশিদের। তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
উত্তর সুমাত্রার অভিবাসন প্রধান রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ওই বাংলাদেশিরা পর্যটক ভিসা নিয়ে ইয়োগিয়াকার্তা ও বালি হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কাজের খোঁজে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার আশা ছিল তাদের। ‘তারা মানব পাচারের শিকার, এখানে এসে ফাঁদে পড়েছিল’। বলেছেন ফেরি মোনাং সিহিতে নামের ওই কর্মকর্তা।
সিহিতে টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান, সুমাত্রা দ্বীপের মেইডেনে তাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে তাদের সন্ধান পাওয়ার পর সবাইকে সুস্থ অবস্থায় অভিবাসী আটককেন্দ্রে নেওয়া হয়। আটকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিহিতে।
রয়টার্স এখনও স্বতন্ত্রভাবে আটকদের সঙ্গে যোগাযোগে সমর্থ হয়নি। পুলিশের সঙ্গেও এখনও কথা বলতে সক্ষম হয়নি তারা। তবে আটক হওয়া ৩৯ বছর বয়সী মাহবুবকে উদ্ধৃত করে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ট্রিবান মেইডান জানিয়েছে, কাউকে কাউকে ৩ মাস ধরে বন্দি রাখা হয়েছিল। মাহবুব ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের সবাইকে জাহাজে তোলা হয়েছিল। ধরেই নিয়েছিলাম আমাদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে বালি পৌঁছানোর পর বাসে করে চারদিনে এখানে এসে পৌঁছেছি।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যে দোকানে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল, তার আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে তথ্য পেয়েই ওই বাংলাদেশিদের উদ্ধারে সমর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। ওই ভবনে সন্দেহজনক চিৎকার-চেচামেচি শুনে প্রতিবেশিদের সন্দেহ হয়েছিল।
২০১২ সালের রাখাইন সহিংসতার পর থেকেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ শুরু করে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সা¤প্রতিক জাতিগত নিধন ও গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। অপেক্ষাকৃত ভালো জীবনের লক্ষ্যে এদের কেউ কেউ মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করে। তবে অভিবাসন কর্মকর্তা সিহিতের দাবি, মঙ্গলবারের আটকরা রোহিঙ্গা নয়।