ইকনোমিস্টের প্রতিবেদন: নির্বাহী পরিচালকের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিল আইসিডিডিআর,বি
ব্রিটিশ সাময়িকী ইকনোমিস্ট আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) নির্বাহী পরিচালকের বরাত দিয়ে ঢাকা শহরে করোনাভাইরাসর সংক্রমণের যে হিসাব দিয়েছে, তার প্রতিবাদ জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
এক বিবৃতিতে আইসিডিডিআর,বি বলেছে, ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেনসের বক্তব্য “প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
গত ৬ জুন ‘ইনফেকশনস আর রাইজিং ফাস্ট ইন বাংলাদেশ ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ শিরোনামে ইকনোমিস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আইসিডিডিআর,বির জন ক্লেমেনসের প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে, যদিও সরকারি হিসাবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজারের কম।
ইকনোমিস্টের ওই প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়। এরপর নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে আইসিডিডিআর,বির ওই বিবৃতি আসে।সেখানে বলা হয়, কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কত হতে পারে জানতে চাওয়ায় অধ্যাপক ক্লেমেনস বলেছিলেন, মহামারী শুরুর পর থেকেই আইসিডিডিআর.বি তাদের কর্মীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় রেখেছে।
“কাশি, জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গ থাকলে তাদের ২৪ ঘণ্টার হটলাইনে স্টাফ ক্লিনিকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা দিলে আইসিডিডিআর,বির ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া আছে। আর যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, আইডিসিআরের সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা ও আইসোলেশন নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং কন্ট্যাক্ট্র ট্র্যাকিং হচ্ছে।”
আসিডিডিআর,বি বলেছে, তাদের মহাখালী ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার কর্মী কাজ করেন এবং তাদের ৪ থেকে ৫ শতাংশ কর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন, যদিও আইসিডিডিআর’বি ক্যাম্পাসের সঙ্গে তাদের সংক্রমিত হওয়ার কোনো যোগসূত্র মেলেনি।
“আইসিডিডিআর,বির ৪ থেকে ৫ শতাংশ কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার এই হার পুরো ঢাকা শহরের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের পরিস্থিতিকে বোঝায় না। আর এই হার ধরে অতি সরলভাবে পুরো শহরের পরিস্থিতির তুলনা করাটাও হয়তো যৌক্তিক নয়। এই সংখ্যাকে কেউ যদি পুরো ঢাকার জনসংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে তুলনা করতে যান, তখন মোট শনাক্তের সম্ভাব্য সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে সাত লাখ।”
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক ডা. এ এম জাকির হুসাইন বলেন, “কোনো একক প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পুরো শহরের চিত্র বোঝা যাবে না। এ কারণে ইকনোমিস্টের হিসাব অবৈজ্ঞানিক।
“আইসিডিডিআর,বির কর্মীদের জরিপ দিয়ে দেশের বা কোনো একটি শহরের পুরো চিত্র বোঝা সম্ভব নয়। আইসিডিডিআর,বির লোকের যে রকম সংক্রমিত হওয়ার হার বা সম্ভাবনা- তা অন্য মানুষের মত না। সেখানে রোগী আসে, তাদের সংস্পর্শে আসেন কর্মীরা। তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যারা ঘরে থাকে বা অন্যান্য জায়গায় থাকে তাদের চেয়ে বেশি।”
এই এপিডেমিওলজিস্ট বলেন, “যদি এ জরিপ দৈবচয়ন ভিত্তিতে করা হত, তাহলেও হয়ত বুঝতে পারতাম ঠিক আছে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পুরো শহর বা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে না।”