ইউরোর সেমিতে ওঠা নয় যেন ‘বিশ্বকাপ’ই জিতে গেছে ইংল্যান্ড!
শনিবার রাতে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে নাম লিখেছে ইংল্যান্ড। ২৫ বছর পর এই প্রথম ইউরোর সেমিতে জায়গা করে নিলো গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
সেমিফাইনালে ওঠা অবশ্যই আনন্দের। কিন্তু এই সেমিফাইনালে ওঠা নিয়ে ইংলিশদের উচ্ছ্বাস দেখলে মনে হবে যেন ‘বিশ্বকাপ’ই জিতে গেছে তারা। ইউক্রেনকে হারানোর পর থেকে ব্রিটেনের মূল ধারার পত্র-পত্রিকাগুলোতেই ইংলিশদের মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বাসের চিত্র ভেসে উঠেছে।
ডেইলি মেইলের অনলাইন খুললেই দেখা যাবে শুরুতে ভাসছে তাদের ইউরোর সেমিতে ওঠার খবর। এটা খুবই স্বাভাবিক যে, একটি পত্রিকা এমন একটি সাফল্যকে শিরোনামে কিংবা হোম পেজে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ধরে রাখবে। কিন্তু খেলাধুলার পাতায় প্রবেশ করলে আর কোনো খবরই পাওয়া যাবে না ইংল্যান্ডের সেমিতে ওঠার খবর ছাড়া।
এমনকি কোচ গ্যারেথ সাউথগেট কোন বাড়িতে থেকে এত ঠান্ডা মাথার অধিকারী হলেন, সে খবরও গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে ডেইলি মেইল। লন্ডনের রাস্তায় সারারাত ধরে ভক্ত-সমর্থকদের উদ্দাম উচ্ছ্বাসের চিত্র দেখলেও মনে হবে যেন চূড়ান্ত সাফল্য এসে গেছে তাদের হাতে। অথচ, মাত্র সেমিফাইনালে উঠেছে দলটি।
একটি সংবাদের শিরোনাম এভাবে করেছে, ‘ইংল্যান্ড ইন ড্রিমল্যান্ড। ফাইনালে উঠতে আর মাত্র এক ম্যাচ বাকি এবং ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর সবচেয়ে বড় সাফল্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে’।
আবার বিবিসির জরিপে জানাচ্ছে, ইউক্রেনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের এই ম্যাচটি নাকি গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি দর্শক দেখেছে টিভিতে। এছাড়া তো খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত অনুভূতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নিউজ আছেই। আছে খেলোয়াড়দের স্ত্রী-সন্তানদের অনুভূতি নিয়ে নিউজও। কোয়ার্টার ফাইনালে এই জয়ের সময় কে কোথায় ছিল, সে সব নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ (!) নিউজ প্রকাশ করেছে ইংলিশ মিডিয়াগুলো।
দ্য সান তো ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে ‘সেমি গড’ বানিয়ে ফেলেছে। লাল রংয়ে পত্রিকাটির হেডিং ‘রোম জয়’। এমনভাবে উপস্থাপনা করেছে যেন রোম থেকে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা বিশ্বকাপটাই ঘরে তুলে এনেছে তারা। দ্য সান, কোচ সাউথগেটকে তো সবচেয়ে পারফেক্ট কোচ হিসেবে সার্টিফিকেটই দিয়ে দিলো।
আরও একটি বিরল রেকর্ড গড়েছেন ইকুয়েডরের বিপক্ষে। এদিন আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি তিনি করেন ফ্রি-কিক থেকে। এ নিয়ে ক্লাব এবং দেশের হয়ে মোট ৫৮টি ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন মেসি। এ ক্ষেত্রে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলেছেন মেসি। ক্লাব এবং দেশের হয়ে মোট ৫৭টি গোল করেন রোনালদো।
দ্য গার্ডিয়ানেরও একই অবস্থা। খেলার পাতায় ঢুকলে মাঝে-মধ্যে দু’একটি ভিন্ন সংবাদ চোখে পড়লেও ইউরোয় ইংল্যান্ডের সেমিতে ওঠার উচ্ছ্বাসটাই সবচেয়ে বেশি। বিশ্বজুড়ে সমাদৃত বিবিসিতেও হোম পেজ এবং খেলাধুলার পাতায় ঠিক একইভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে ইংলান্ডের ইউরোর সেমিতে ওঠা নিয়ে।