November 25, 2024
আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনে ঢুকে পড়েছে মার্কিন সেনা!

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রবেশ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি দল। রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তারা এলেও সম্মুখসমরে অংশ নেবে না।

ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর ইউক্রেনকে যেসব অস্ত্র দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র সেসব পরিদর্শনের কাজে নিয়োজিত থাকবেন এসব সেনা।

ওয়ার্ল্ড সোশ্যালিস্ট ওয়েবসাইট ও এনবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। মার্কিন বিমান বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এক অফিসিয়াল ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্যাট রাইডার বলেন, সক্রিয় দায়িত্বে থাকা কিছু মার্কিন সেনা সদস্যকে ইউক্রেনে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা কিয়েভে মার্কিন দূতাবাস থেকে অনেক দূরে কাজ করছেন।

এর আগে গত সোমবার (১ নভেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমগুলোকে দেওয়া ব্রিফিংয়ে ইউক্রেনে মার্কিন সৈন্য প্রবেশের ব্যাপারে জানান। তিনি বলেছিলেন, আমাদের সেনা সদস্যরা ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্রের মজুদ পর্যবেক্ষণের জন্য গেছেন। তারা পরিদর্শন শুরু করেছেন।

এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম মার্কিন সৈন্যরা পূর্ব ইউরোপীয় দেশটিতে প্রবেশ করলো।

মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে মার্কিন সৈন্য প্রবেশের ব্যাপারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার প্রশ্ন করেন মিলিটারি ডটকমের সাংবাদিক ট্র্যাভিস ট্রিটেন। ইউক্রেনের অভ্যন্তরে যে মার্কিন সেনারা অস্ত্র পরিদর্শন করছেন, তাদের জড়িত থাকার নিয়মগুলো কেমন হবে? তারা যদি রুশ বাহিনীর লক্ষ্যে পরিণত হয় বা তারা যদি চলমান যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হন, সে ক্ষেত্রে কী হবে- জানতে চাওয়া হয়।

উত্তরে রাইডার বলেন, ইউক্রেনে আমাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত ছোট দল আছে যারা বিভিন্ন স্থানে সেনাদের নিরাপত্তা সহায়তা দেবে। আমি যতটুকু জানি, সেনারা যেকোনো ধরনের ফ্রন্টলাইন অ্যাকশন থেকে অনেক দূরে থাকবে। এ ব্যাপারে আমরা ইউক্রেনীয়দের ওপর নির্ভর করছি। তারা সামনের সারিতে কাজ করবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইউক্রেনে আমাদের কোনো যুদ্ধ বাহিনী নেই। মার্কিন বাহিনীর কেউ ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিচালনাও করছে না। তাদের শুধু প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতায় নিযুক্ত করা হয়েছে।

ট্র্যাভিস ট্রিটেন আবার প্রশ্ন করেন, মার্কিন সেনারা তো দূতাবাসের বাইরে কাজ করবেন। ফলে এ নিয়ে চলমান উত্তেজনা বাড়বে কিনা। এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, মার্কিন পদক্ষেপটি উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য নয়। তিনি ইউক্রেনে কোনো মার্কিন সেনা নিহত হলে কী হবে- সে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।

গত সপ্তাহে ইউক্রেন জুড়ে নিজেদের লজিস্টিক সাইটগুলোর লক্ষ্যবস্তু প্রসারিত করেছে রাশিয়া। রুশ সেনাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু এখন ইউক্রেনের অস্ত্রের ডিপোগুলো। এদিকে, ইউক্রেন রসদ ও অস্ত্রের চালানের সমন্বয়ের জন্য লিয়াজো হিসেবে কাজ করা মার্কিন সৈন্যরা যদি অসাবধানতাবশত রাশিয়ার দ্বারা লক্ষ্যবস্তু হয় তাহলে পরিণতি কী হবে- একটি বড় প্রশ্ন।

ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভে যে সেনা সদস্যরা গিয়েছেন তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করতে চায়, অস্ত্রগুলো কোথায় কোথায় শেষ হয়ে যাচ্ছে; কীভাবে সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে বা অস্ত্রগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রেরই সরাসরি নিয়ন্ত্রণ আছে কিনা।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *