ইউক্রেনের কাছে ড্রোন বিক্রি নিয়ে দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের কাছে অত্যাধুনিক চারটি বৃহদাকৃতির ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) বিক্রির পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমানে এ নিয়ে দ্বিধায় আছে মার্কিন সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণায়ের আপত্তিই এই দ্বিধার মূল কারণ।
শনিবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনে ৪টি এমকিউ ওয়ান সি গ্রে ইগল ড্রোন বিক্রির পরিকল্পনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। অত্যাধুনিক নজরদারি প্রযুক্তি সম্বলিত ও বিধ্বংসী হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম ইগল ড্রোন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধাস্ত্র। এই ড্রোন তৈরিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা একান্তভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ও বর্তমানে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাধুনিক।
গত মার্চে এই ধরনের ড্রোন কিনতে লিখিত প্রস্তাব পাঠায় কিয়েভ। তারপর জুন মাসের প্রথম দিকে ইউক্রেনের কাছে ৪টি এমকিউ ওয়ান সি গ্রে ইগল ড্রোন বিক্রির ব্যাপারে অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউস। তবে হোয়াইট হাউস অনুমোদন দেওয়ার পরই তাতে আপত্তি জানায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন।
পেন্টাগনের যুক্তি, যদি এই ড্রোন কোনোভাবে রাশিয়ার হাতে পড়ে— তাহলে এই প্রযুক্তি আর গোপন থাকবে না এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সুয়ে গফ এ সম্পর্কে রয়টার্সকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে কোনো মার্কিন সমরাস্ত্র প্রযুক্তি হস্তান্তর করার আগে এটি অংশীদারদের কাছে কতখানি প্রয়োজনীয় এবং হস্তান্তরের ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে কোনো ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে কিনা- তা নিয়ে পর্যালোচনা করে পেন্টাগন।’
‘আর আমাদের পর্যালোচনা বলছে, যদি কোনো কারণে এই ড্রোন বেহাত হয় এবং রাশিয়ার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন নয়— এমন কোনো শক্তির হাতে পড়ে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েবে।’
রয়টার্সের প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের কাছে এই ড্রোন বিক্রি করা হবে কিনা তা এখন সম্পূর্ণ নির্ভর করছে পেন্টাগনের পর্যালোচনার ওপর। পেন্টাগন যদি সায় দেয়, কেবল তাহলেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই ড্রোন কিনতে পারবে ইউক্রেন।
তবে পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কবে নাগাদ পর্যালোচনা শেষ হবে— তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। ফলে, ইউক্রেন অত্যাধুনিক মার্কিন ড্রোন কিনতে পারবে কিনা, তা আক্ষরিক অর্থেই ঝুলন্ত অবস্থায় আছে।
ওই কর্মকর্তার জানান, যদি ড্রোন বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে— সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যবান প্রযুক্তির কোনো যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে ইউক্রেনকে, কিন্তু তাতেও সময় লাগবে অন্তত কয়েক মাস।