ইউক্রেইনে অস্ত্র পাঠানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি
রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানার মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র ইউক্রেইনে না পাঠানোর জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি দাবি জানিয়েছে মস্কো, অন্যথায় অনির্দিষ্ট ‘অপ্রত্যাশিত পরিণতির’ ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করেছে।
চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক একটি কূটনৈতিক প্রতিবাদসহ বাইডেন প্রশাসনের কাছে ধারাবাহিক কয়েকটি সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে রাশিয়া, জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘দিমাশ’ নামে পরিচিত ওই কূটনৈতিক নোটটি নিয়মিত চ্যানেলের মাধ্যমেই পাঠানো হয়েছে, তবে তাতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বা রাশিয়ার অন্য কোনো উর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্বাক্ষর নেই।
ওই কর্মকর্তাদের একজন জানিয়েছেন, এতে শীর্ষ কর্মকর্তাদের কারও স্বাক্ষর না থাকলেও এ থেকে এমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র পাঠিয়েছে তা (যুদ্ধে) প্রভাব ফেলেছে।
রাশিয়ার ওয়াশিংটন দূতাবাস ওই দিমাশ দেওয়ার পরদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেইনের জন্য আরও ৮০ কোটি ডলার অস্ত্র সহায়তার ঘোষণা দেন।
অত্যাধুনিক আক্রমণাত্মক এসব অস্ত্রের সরবরাহ নিয়ে রুশরা উদ্বিগ্ন, সতর্কবার্তাগুলো থেকে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া প্রকাশ্যে যেসব হুমকি দিয়েছে ওই নোটের সুরেও তার ছাপ আছে। এতে ইউক্রেইনের ভূখণ্ডে অস্ত্রের চালান ঢোকার পর সেগুলোকে লক্ষ্যস্থল করা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
এ নোট হোয়াইট হাউসের ভেতরে বিশেষ কোনো উদ্বেগ তৈরি করেনি বলে ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে ‘অপ্রত্যাশিত পরিণতি’ কী হতে পারে তা নিয়ে পেন্টাগন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে বিস্তৃত আলোচনার সূচনা করেছে।
অস্ত্রের চালান চূড়ান্ত পর্যায়ে ইউক্রেইনের সেনাদের হাতে পড়ার আগে নেটোভুক্ত দেশের ভূখণ্ডে থাকাকালেই সেগুলোকে লক্ষ্যস্থল করা হবে বা অন্তর্ঘাত চালানো হবে কি না, ‘অপ্রত্যাশিত পরিণতির’ মধ্যে তাও অন্তর্ভূক্ত কি না- সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট প্রতিবাদ জানিয়ে পাঠানো নোট নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছে।
গেল সপ্তাহে বাইডেন ইউক্রেইনকে যেসব অস্ত্র দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে দীর্ঘ পাল্লার কামানও রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলে নতুন করে আক্রমণ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ওই কামানগুলো দনবাসের খোলা প্রান্তরে ভিন্ন ধরনের এক যুদ্ধের সূচনা করবে বলে বিশ্বাস মার্কিন কর্মকর্তাদের।
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পেন্টাগনের কর্মকর্তারা জোর দিচ্ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু আত্মরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠাবে যাতে যুদ্ধের বিস্তৃতি এড়ানো যায়; কিন্তু রাশিয়া বেসামরিক ও অসামরিক লক্ষ্যে হামলা চালাতে থাকায় ওই বিতর্ক থেমে গেছে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, বলেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।