ইউক্রেইনের কেমিন্না শহরের ‘পতন’
রাশিয়ার বাহিনীগুলো হাতে ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের কেমিন্না শহরের পতন হয়েছে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
তবে লুহানস্কের এই শহরটির পতনের বিষয়ে তারা আর বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার বাহিনীগুলো প্রায় ১৮ হাজার বাসিন্দার শহর কেমিন্না নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, বিভিন্ন প্রতিবেদনে এ খবর আগেই প্রকাশিত হয়েছিল।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার বাহিনীগুলো উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে স্লোভিয়নস্ক ও ক্রামাতোর্স্কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ইজুম শহরের দক্ষিণে ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলোর সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার বাহিনীগুলো দনবাস অঞ্চলে অত্যন্ত সুরক্ষিত ইউক্রেইনীয় অবস্থানগুলো ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে, এমন ধারণা পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। রাশিয়ার বাহিনীগুলো দক্ষিণ দিক থেকে জাপোরিজজিয়া শহরে আক্রমণ করতে পারে, এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো সেখানে প্রতিরক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
এসব তথ্য বিবিসি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হওয়ার পর গত সপ্তাহে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের প্রদেশগুলোতে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি ইউক্রেইনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অধিকৃত এলাকাগুলোর সঙ্গে ২০১৪ সালে মস্কোর অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে পারবে তারা।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দনবাস অঞ্চলে বিদেশি অস্ত্র সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা ইউক্রেইনের রেলওয়ের ছয়টি স্থাপনা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।
ইউক্রেইনের রাষ্ট্রায়ত্ত রেল কোম্পানির প্রধান জানিয়েছেন, সোমবার ইউক্রেইনের পাঁচটি রেলওয়ে স্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া, এতে রেলওয়ের এক কর্মী নিহত ও আরও চার জন আহত হয়েছেন।
ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় সেক্টরগুলোর কমান্ড এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার পাঁচটি আক্রমণ প্রতিহত করে দুইশরও বেশি রুশ সেনাকে হত্যা করেছে, পাঁচটি ট্যাঙ্ক ও আটটি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।
তবে এসব দাবি বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
ইউক্রেইনে দুই মাস ধরে চলা রাশিয়ার আক্রমণে কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে, শহর ও নগরগুলো ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ৫০ লাখেরও বেশি লোককে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। এটি ১৯৪৫ সালের পর থেকে ইউরোপের কোনো দেশে হওয়া সবচেয়ে বড় আক্রমণ।
রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেইনকে নিরস্ত্রীকরণ ও নব্যনাৎসী মুক্ত করতে প্রতিবেশী দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে তারা।