আ.লীগের সম্মেলন ঘিরে তৎপর ভুয়া সাংবাদিকরা
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। আর এই সম্মেলন ঘিরে তৎপর রয়েছেন ভুয়া সাংবাদিকরা।শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অপেক্ষা করে দেখা গেছে, যখনই নেতা-কর্মীরা কোনো মিছিল নিয়ে আসছেন তখনই ব্যুম, ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন এসব সাংবাদিক। ৪-৫ জনের দল মিলে ঘিরে ধরছেন নেতৃত্ব দানকারীদের। এরপর সুকৌশলে বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবি করছেন। কয়েকজনকে নিজের প্রচারের জন্য অর্থ দিতেও দেখা গেছে।
অনাবিল টিভি নামে একটি নামসর্বস্ব আইপি টিভির এক কথিত রিপোর্টারের কাছে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম-পরিচয় দিতে চাননি তিনি। বলেন, ভাই সকাল থেকে এখানে ডিউটি করছি। আমরা তো আর বেতন পাই না, তাই কেউ খুশি হয়ে কিছু দিলে নিচ্ছি। এটা সাংবাদিকার নৈতিকতা বিরোধী কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না।
নিউজ বিডি নামে আরেকটি তথাকথিত আইপি টিভির এক সাংবাদিককে পরিচয় গোপন রেখে প্রশ্ন করলে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং নিজের পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান।
একই কাজে জড়িত বাংলা লাইভ ২৪ নামে একটি কথিত পত্রিকার সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয়। তবে, অন দ্যা রেকর্ড কিছু না বললেও তিনি জানান, বাধ্য হয়েই এসব কাজ করছেন তারা। আইডি কার্ড এবং ব্যুম, ক্যামেরা স্ট্যান্ড বাবদ এক কালীন ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি। তার দাবি সেই টাকা তুলতেই তিনি বাধ্য হয়ে এমন কাজ করছেন।
এস টিভি নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের এক কথিত সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি বলেন, ভাই পুরো বিষয়টি আপনাকে বুঝিয়ে বলছি। এ সময় একটু পাশে গিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেন তিনি। পরে বলেন, ভাই নিরুপায় হয়ে এই কাজ করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাত্রাবাড়ী থানার ৪৮ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের এক নেতাকে অর্থ দিতে দেখা যায়। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি কোনো টাকা পয়সা দিইনি। ছবি আছে বলায় তিনি বলেন, ওরা আমার পূর্ব পরিচিত, কাছের ছোট ভাই তাই দিলাম।
এ সময় এসব কথিত সাংবাদিক অর্থ দাবি করেছেন, এমন এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজ টিমের। আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাহাদুর নামে ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি বলেন, আমাদের কাছে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এস টিভির একজন লোক এসে ৫০০ টাকা দাবি করেছিল। পরে আমরা না করে দিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারিভাবে কোনো অনুমোদন না দেওয়া হলেও শুধু ঢাকাতেই নামে-বেনামে অন্তত শতাধিক আইপি টিভি রয়েছে। তাদের এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমের জন্য সত্যিকারের সাংবাদিকরা অবমূল্যায়িত হচ্ছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।