September 20, 2024
জাতীয়বিশেষ সংখ্যা

আ-মরি বাংলা ভাষা

. প্রতিবেদক

আজ ১২ই ফেব্রæয়ারি। মহান ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রæয়ারির ১২তম দিন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারি ভাষা আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের গুলিতে সরকারিভাবে ছয়জন ভাষা শহীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা আজ জানবো একুশের প্রথম ভাষা শহীদ রফিক উদ্দীনের জীবনী সম্পর্কে। তার ডাক নাম রফিক। পুরো নাম রফিক উদ্দীন আহম্মেদ। পরিবারের বড় ছেলে হবার কারনে সকলের প্রতি তার কর্তব্যবোধ ছিলো বেশি। পাশাপাশি রফিকের দেশপ্রেম বোধও ছিলো প্রখর।

মানিকগঞ্জ জেলার পারিল গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়া রাফিজা খাতুনের বড় ছেলে রফিক উদ্দীন আহমেদ। পারিবারিক সূত্রে রফিক প্রিন্টিং ব্যবসা করতো। তার আরো চারটি ছোট ভাই ছিলো। রশিদ, খালেদ, সালাম খোরশেদ, এর মাঝে খালেদ ছিলেন বীরমুক্তি যোদ্ধা। ছোট বেলা থেকেই রফিক ছিলেন সত্যবাদী, নিষ্ঠাবান, দেশপ্রেমিক সমাজসেবী। নাটক সঙ্গীতের ওপরও তাঁর বেশ দখল ছিলো। আশপাশের গ্রামে তিনি প্রায়ই বিভিন্ন নাটকযাত্রায় অভিনয় করার জন্য যেতেন।

বাড়ীর পাশেই ছিলো রফিকের চাচার বাড়ী আর চাচাতো বোন রাহেলা খাতুন পানুকে তিনি খুব পচ্ছন্দ করতেন। অপরদিক থেকে পানুও রফিককে পছন্দ করতো। তাদের এই ভাবভালোবাসার কথা পরিবারের সকলে জানতো। এক সময় পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হবার পর রফিক বিয়ের বাজার করার জন্য মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসে।

দিনটি ছিলো ফেব্রæয়ারির ২১, ১৯৫২। ঢাকা থেকে বিয়ের বাজার শেষ করে রফিক বাড়ী ফিরছিলেন। সাথেই ছিলো বিয়ের শাড়ীচুড়ি, আলতাঅলংকারসহ আরো কিছু জিনিস। পথে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষা বাঁচাওআন্দোলনের সম্মুখিন হন। হাজার হাজার মানুষকে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই শে¬¬াগান নিয়ে ছুটতে দেখে তিনিও মিছিলে সামিল হন। সময় তার সাথে ছিলো তার ভাতিজা। ভাতিজার হাতে বিয়ের শাড়ীচুড়ি তুলে দিয়ে তিনি মিছিলে যোগ দেন। পরে বাড়ী যাবেন বলে ভাতিজাকে পাঠিয়ে দিলেও তার আর বাড়ী ফেরা হয় নি। পাক মিলিটারির গুলিতে তিনি শহীদ হন। পরে তার মৃতদেহ পাকিস্তান কমান্ডোরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে চুরি করে নিয়ে যায়। হাজার হাজার মাতৃভাষাকামী বাঙ্গালীর সাথে তার মৃত দেহও আজিমপুর গোরস্থানে পুতে ফেলা হয়।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *