October 18, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

আসামের নাগরিকপঞ্জিকে ভারতের বিষয় হিসেবে দেখছেন মন্ত্রীরা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাইলেন না বাংলাদেশ সরকারের দুই মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তারা বলছেন, ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয়টি নিয়ে তারা চিন্তিত না হলেও ঘটনাটি তাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

নানা বিতর্কের মধ্যে আসামের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি শনিবার প্রকাশিত হয়েছে, যে তালিকায় রাজ্যটির বাসিন্দা ১৯ লাখ মানুষের নাম স্থান পায়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে আসামে যারা আবাস গেঁড়েছেন, তারাই তালিকায় রয়েছেন।

নাগরিকপঞ্জিতে বাদ পড়াদের ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ভারত থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে বলে বাংলাদেশের মধ্যেও কারও কারও উদ্বেগ রয়েছে; যদিও এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে আরও কয়েকটি ধাপ বাকি রয়েছে।

রবিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের কাছে আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এটা পর্যবেক্ষণ করছি এ কারণে এখানে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আছে, আপিল করার সুযোগ আছে উচ্চ আদালতে। কাজেই বিষয়টি সম্পর্কে এ মুহূর্তে সুপ্রিম রিমার্কস করার সুযোগ নেই।

নাগরিকপঞ্জিতে বাদ পড়াদের ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনার বিষয়টি ভারতের গণমাধ্যমে আসছে। ফলে বাংলাদেশের কোনো প্রস্তুতি রয়েছে কি না- জানতে চাইলে কাদের বলেন, আমরা সতর্ক আছি। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।

রবিবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে কারারক্ষীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আসাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তারা যদি আমাদের সঙ্গে কিছু বলে তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়াটা আমরা জানাব।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, একাত্তর সালের পরে আমাদের বাংলাদেশ থেকে কোনো লোক ভারতে যায়নি। যারা গিয়েছে তারা আগেই গিয়েছে। ওই  দেশ থেকে লোক যেমন এ দেশে এসেছেন, তেমনই আমাদের দেশ থেকেও গিয়েছেন। কাজই এনিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আসামের অবৈধ নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ ‘ভূ-রাজনৈতিক ঘুঁটি’ হতে যাচ্ছে বলেও কারও কারও আশঙ্কা।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, দেখুন বাংলাদেশ এখন অর্জনে উন্নয়নে মিশে অনেকেরই ঈর্ষার কারণ। কাজেই অনেকে বাংলাদেশকে নিয়ে সমীহ আছে, অনেকেরই ভূ-রাজনৈতিক বিষয় তো আছেই। জিয়ো-পলিটিক্যাল বিষয় আছে, এটা আগেও ছিল, এখন আরও বেশি হয়েছে।

কাজেই এ দেশকে নিয়ে বিভিন্ন দেশের বা যাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় আছে,তাদের চিন্তুা-ভাবনা থাকতেও পারে। আর ভূ-রাজনৈতিক বিষয়টিকে উপেক্ষা করারও কোনো কারণ নেই। তবে যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আলোচনার মধ্য দিয়ে তা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের কথা জানান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের।

তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমরা তৈরি আছি। আমরা তো কারও সাথে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি না, আমরা পিসকে ওন করার চেষ্টা করছি এবং যে কোনো সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারও সাথে শত্র“তা নয়’- এ নীতির ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে চাইছি।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *