November 27, 2024
খেলাধুলা

আশরাফুলের বিশ্বরেকর্ডের ২০ বছর

শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে ২০০১ সালে আয়োজিত ত্রিদেশীয় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আন্ডারডগই ছিলো বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের ব্যবধানটা ছিল ইনিংস ও ২৬৪ রানের। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও খুব ভালো করার আশা ছিলো না।

স্বাভাবিকভাবে সেই ম্যাচেও বাংলাদেশের পরাজয় ইনিংস ব্যবধানে, এবার ইনিংস ও ১৩৭ রানের ব্যবধানে। তবে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে হওয়া সেই ম্যাচটি ঢুকে গেছে ইতিহাসের পাতায়। কেননা ঠিক ২০ বছর আগের সেই ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, যা টিকে আছে এখনও।

প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক করানো হয় আশরাফুলের। তার বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ খেলতে পারে মাত্র ৩৬.৪ ওভার, স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৯০ রান। সেখানে অভিষিক্ত আশরাফুলের অবদানের ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৬ রান, ৫৩ বলে।

এটি কোনো রেকর্ড ছিল না, কিশোর বয়সের আশরাফুল নিজের সামর্থ্যের মঞ্চায়ন করেন দ্বিতীয় ইনিংসে। বাংলাদেশের ৯০ রানের জবাবে দুই সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটির সুবাদে শ্রীলঙ্কা করে ৫৫৫ রান, লিড দাঁড়ায় ৪৬৫ রানের। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের আরেকটি ইনিংস পরাজয় ছিল অনিবার্য।

শেষ পর্যন্ত ইনিংস ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে তার আগে বিশ্বরেকর্ড গড়েন আশরাফুল। দ্বিতীয় ইনিংসের ৩০তম ওভারে ৮১ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটলে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। আর সাজঘরে ফেরেন ইনিংসের ৯৭তম ওভারে গিয়ে, দলের সংগ্রহ তখন ৩১৪ রান।

মাঝের সময়টায় মুত্তিয়া মুরালিধরন, চামিন্দা ভাস, সনাত জয়াসুরিয়াদের বিপক্ষে সাবলীল ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি তুলে নেন আশরাফুল। পঞ্চম উইকেটে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে গড়েন ১২৬ রানের জুটি। যেখানে বুলবুলের ব্যাট থেকে আসে ৫৬ রানের ইনিংস।

পরে ৯৬ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়ের অবদান ছিল ৪৮ রান। অধিনায়কের বিদায়ের খানিক পর রুচিরা পেরেরা হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন আশরাফুলও। ততক্ষণে তার নামের পাশে ছিল ২১২ বলে ১৬ চারের মারে ১১৪ রানের ইনিংস।

এই সেঞ্চুরিটি আশরাফুল করেছিলেন আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে, ২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে। এটি ছিলো টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকণিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। যা টিকে রয়েছে এখনও। আশরাফুল ভেঙেছেন মুশতাক মোহাম্মদের ১৯৬১ সালে ১৭ বছর ৭৮ দিন বয়সে করা সেঞ্চুরির রেকর্ড।

আশরাফুলের ভেরিফাইড পেজ থেকেও জানানো হয়েছে এ রেকর্ডের কথা। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘২০০১ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের নবাগত যুবা মোহাম্মদ আশরাফুল বিস্ময়বালক হিসেবে আবির্ভূত হলেন বিশ্ব ক্রিকেটে। শ্রীলংকার কলম্বোয় মুরালি-ভাসদের অবলীলায় খেলে হাঁকালেন সেঞ্চুরি।’

‘টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকণিষ্ঠ ক্রিকেটার (১৭ বছর ৬১ দিন) হিসেবে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়ে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশকে চেনালেন নতুন করে। মোহাম্মদ আশরাফুলের বিস্ময়কর রেকর্ডের আজ ২০ বছর পূর্ণ হলো। শুধু ২০ বছর কেনো প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে টিকে থাকুক কলম্বোয় গড়া বিস্ময়কর রেকর্ড।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *