আল জাজিরা বন্ধে রিটের শুনানি শেষ, আদেশ বিকেলে
আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে নিয়ে করা প্রতিবেদন ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরানোর বিষয়ে করা রিটের ওপর মতামত গ্রহণের জন্য নিয়োগ দেয়া অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মতামত তুলে ধরার পর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও বিটিআরসির শুনানি শেষ হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য বিকেল তিনটায় সময় নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব। তাদের শুনানির পরে আদেশের জন্য সময় নির্ধারণ করেন আদালত।
এ সময় আদালতে আজ আরও সংযুক্ত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ফারজানা শায়লা।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, কামালুল আলম, প্রবীর নিয়োগী, ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, আব্দুল মতিন খসরু ও শাহদীন মালিক হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
তারও আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে নিয়ে করা প্রতিবেদন ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
পরে গত বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে নিয়ে করা প্রতিবেদন ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরানোর বিষয়ে মতামত শুনতে ছয়জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। তারই ধারাবাহিতায় সোমবার সেটির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত বলেছেন, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এরই মধ্যে আল জাজিরার প্রতিবেদনটি দেখেছেন। বিটিআরসি এতদিন কী করল, তারা বন্ধ করলো না কেন। আপত্তিকর কিছু সম্প্রচার বন্ধের বিটিআরসির ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন আদালতের কাঁধের ওপর বন্দুক রাখা হচ্ছে? এখন এগুলো বন্ধ করা আর না করা সমান।
এরপর দেশে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার বন্ধে ও ভিডিও সরাতে আদালত কোনো আদেশ দিতে পারেন কিনা, সে বিষয়ে মতামত জানতে ছয়জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
তারও আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে সংবাদমাধ্যমটির প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এ রিট দায়ের করেন। রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আল জাজিরায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়। যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।