January 19, 2025
জাতীয়

আল জাজিরার সেই প্রতিবেদন সরানোর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

আল জাজিরায় প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ যেন প্রতিবেদনটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলে এবং পুনরায় আপলোড না করে সে বিষয়ে অনুরোধ জানাতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিকভাবে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের বিচারকদের স্বাক্ষরের পর সোমবার (১৫ মার্চ) আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে ৩৭ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করেন আদালত। এর আগে এক রিটের শুনানি নিয়ে আদালত বিশেষ ক্ষমতাবলে স্বপ্রণোদিত হয়ে আল জাজিরা নিয়ে এই রায় দিয়েছিলেন।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব।

এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেশে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার বন্ধে ও অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ নামক প্রতিবেদনটি সরাতে হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিতে পারে কি না ও রিটের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে মতামত জানতে অ্যামিক্যাস কিউরি নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে সংবাদমাধ্যমটির প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এ রিট দায়ের করেন। রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

আদেশের আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে ছয় জন অ্যামিকাস কিউরির মধ্যে পাঁচ জন আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিপক্ষে মত দেন। এই পাঁচ জন হলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক।

পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি এই রিট গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মতামত তুলে ধরেন। একজন অ্যামিকাস কিউরি দেশে আল জাজিরা বন্ধের পক্ষের মত দেন। তিনি হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ও সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু।

অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলম বলেন, রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। তবে তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারলেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতে বলেন, দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা উচিত হবে না। এ বিষয়ে রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে অভিমত দেন তিনি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *