আরেক মামলায় রানার জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
টাঙ্গাইলে যুবলীগের দুই নেতাকে হত্যার মামলায় হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায়ও জামিন পেয়েছেন রানা। ফলে কারাগার থেকে সাবেক এই সাংসদের তার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। রানার জমিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় দেয়।
রানার পক্ষে রুল শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী; সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রুশো মোস্তফা। আর রাষ্ট্রপক্ষে রুল শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন ড. মো বশিরউলাহ।
আইনজীবী রুশো মোস্তফা পরে সাংবাদিকদের বলেন, হাই কোর্ট গত ৬ মার্চ এই মামলায় সাবেক এমপি রানাকে ছয় মাসের জামিন দিয়ে রুল জারি করেছিল। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান গত ১৪ মার্চ জামিন স্থগিত করে দেন। পরে ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগও স্থগিতাদেশ বহাল রেখে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রুল শুনানি শেষ করে আদালত আজ রায়ের জন্য রেখেছিলেন। রায়ে জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলটি যথাযথ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে তার মুক্তিতে বাধা থাকছে না। কারণ আরেকটি মামলায়ও তিনি জামিনে আছেন। অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো বশিরউলাহ বলেছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিলে যাবেন।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্যেকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ২৫ মার্চ জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় চেম্বার আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ আবেদনটির শুনানি নিয়ে গত ১ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দিলে এ মামলায় রানার জামিন বহাল থাকে।
অন্যদিকে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন মোটর সাইকেলে করে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হলে পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্ত করে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে পুলিশ।
পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যুবলীগ নেতা শামীম ওমামুন হত্যার ঘটনায় আমানুর রহমান খান রানার নাম উঠে আসে।
গ্রেপ্তাররা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, রানার নির্দেশেই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বিচারিক আদালত গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় রানার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে তার আইনজীবীরা হাই কোর্টে আসেন। তাদের আবেদন শুনে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৬ মার্চ রানাকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছিল।