আরও আগে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে আরও আগে প্রবেশপত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন।
পাবলিক পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করে এমন কোনো কর্মসূচি দেওয়া থেকে রাজনৈতিক দলগুলো বিরত থাকবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
দেশের সাড়ে তিন হাজার কেন্দ্রে সোমবার একযোগে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা; যাতে অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন শিক্ষার্থী।
প্রথম দিন এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র ও সহজ বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা হচ্ছে। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং কারিগরি বোর্ডে ভোকেশনালে বাংলা-২ (১৯২১) (সৃজনশীল) (নতুন সিলেবাস/পুরাতন সিলেবাস) এবং বাংলা-২ (১৭২১) (সৃজনশীল) (নতুন সিলেবাস/পুরাতন সিলেবাস) এবং বিষয়ের পরীক্ষা হচ্ছে।
তেজগাঁও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে অনেক শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র পায়নি জানানোর পর দীপু মনি বলেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আছে। তারা ‘রেজিস্ট্রশেন ফি’ জমা দিয়েছে কিন্তু তারপরে দেখা যায় ‘রেজিস্ট্রেশন’ ঠিকমত হয়নি, এরকম অনেক ঘটনা ঘটে।
“এ বছর কতগুলো জিনিস নজরে এসেছে। আমরা এর প্রত্যেকটির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, আগামীতেও করব যেন এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই না ঘটে।”
তিনি বলেন, পরীক্ষার্থী পরীক্ষার আগে প্রস্তুত হবে। প্রবেশপত্র নিয়ে দুশ্চিন্তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
“এটি তো হতেই পারে না। প্রবেশপত্র যেন আরও আগে পায় আমরা সেটির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের তথ্য দিতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রত্যেকটির তদন্ত করে দেখব, জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে তদন্ত করে দোষী যারাই, হন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
“কারণ পরীক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে কেউ কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ করবেন এটিকে কোনোভাবেই আমরা প্রশ্রয় দেব না।”
এবারের এসএসসি পরীক্ষার আগে গত ২০ জানুয়ারি প্রবেশপত্র বিতরণ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের কাছে প্রবেশপত্র বিতরণ করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কারো প্রবেশপত্রে ভুল পাওয়া গেলে তা ২২ থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বোর্ড থেকে সংশোধন করানোর সময় বেধে দেয় বোর্ড।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার ৩৫টি বিষয়ে ১৫ কর্মদিবসে ১৭ শিফটটে পরীক্ষা হবে। ৩০টি বিষয়ে সৃজনশীল এবং পাঁচটিতে রচনামূলক পদ্ধতি পরীক্ষা হবে। ৫ হাজার ৫৮০ সেট প্রশ্নপ্রত্র প্রণয়ন করে ২ হাজার ৭৯০ সেট প্রশ্ন মুদ্রণ করা হয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ হাজার ২০০ কক্ষে পরীক্ষা হচ্ছে। এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষক নিয়োজিত আছেন।
সম্পূর্ণ নকল ও প্রশ্নফাঁসমুক্ত এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করতে অভিভাবকসহ সকলের সহযোগিতা চান দীপু মনি।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের দিক থেকে যা করণীয় তার আমরা তার সর্বোচ্চটুকু করছি, কিন্তু আমরা সকলেরই সহযোগিতা চাই। কোথায় যেন কেউ কোনো গুজব ছড়িয়েও কাউকে প্রতারিত কতে না পারে। সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন সংস্থা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছেন এবং যথযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
“কাজেই আমরা আশা করছি কোনো ধরনের কোনো সমস্যা ছাড়া সুচারুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।”
জনগণ বিএনপির রোববারের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার মধ্যে যদি কোনো যৌক্তিক কারণেও এ ধরনের কর্মসূচি দেয় জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সেটি আমাদের জাতির কাছে নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“কোনো দলই কোনো কারণেই পাবলিক পরীক্ষা চলার সময় এমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেবেন না যেগুলো পরীক্ষার প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে, তাদের মধ্যে উদ্বেগের জন্য দেয়।”