আম্ফানের প্রভাবে সুন্দরবনে ক্ষতি প্রায় ২.২৫ কোটি টাকার
বিশেষ প্রতিবেদক
গত সপ্তাহের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে প্রায় ২.২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনে। একটি জরিপে দেখা গিয়েছে প্রায় ১২,৩৬৮ টি ম্যানগ্রোভ গাছ উপড়ে গিয়েছে ও ১৫০ স্থাপনা, ১০ টি যানবাহন সহ আরো বেশ কিছু জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে যার মূল্য প্রায় ২.২৫ কোটি টাকা।
এখনো পর্যন্ত কোন হরিণ বা বাঘের মৃত্যুর প্রমান পায়নি বন বিভাগ।
সুপার সাইক্লোন আম্ফান মে মাসের ২০ তারিখে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমারেখার মাঝামাঝিতে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টিপাত ও ১০-১২ ফিট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সহ আঘাতহানে।
আবহাওয়াবিদদের মতে স্লাইকোনটি সুন্দরবনে প্রবেশের সময় এর বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৬০-১৭০ কিমি/ঘন্টা যা দমকা হাওয়া আকারে ১৯০ কিমি/ ঘন্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিলো।
বিশেষজ্ঞদের মতে সুন্দরবন না থাকলে আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি আরো বেশি হতো ।
সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম ভাগটা ঢাল হিসেবে কাজ করেছে ও আম্ফানে বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে যা জানমালের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে।
বন বিভাগ বন ও পশু-পাখিদের উপর আম্ফানে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে একটি প্রাথমিক হিসাব বের করতে পেরেছে । উল্লেখ্য এই বন-পশু সম্পদ প্রায় ৫ লাখ মানুষের জীবিকা নির্বাহে অবদান রাখে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (খুলনা পশ্চিম) বশির-আল-মামুন জানান, পশ্চিম সুন্দরবনে প্রায় ১০.১১ লাখ টাকা মূল্যের কমপক্ষে ১২, ৩৩১ টি গাছ উপড়ে গেছে। এছাড়াও বনের প্রায় ৭০ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার মূল্য ৪৭.৫০ লাখ টাকা
ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ২৫টি অফিস কাম বাসভবন এবং ব্যারাক, ১০ টি যানবাহন, ৩ টি পন্টুন, ৮ টি কাঠের জেটি, ২৩ টি পুকুর, দুইটি জেনারেটর ও হাটার রাস্তা। এগুলা ছাড়াও ১১২টি সুন্দরি, ১২৮২ টি গেওয়া ৩৬ টী পশুর, ১৮৪ টি কেওড়া, ১৩৯ টি বাইন, এবং ১০,৫৭৯ টি গড়ান গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমরা আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়ন সমাপ্ত করেছি। আমাদের অধিকাংশ কর্মকর্তারা আম্ফানের পর সুন্দরবন ঘুরে দেখেছেন। তারা জানিয়েছেন সিডর আইলা থেকে আপম্ফানে ক্ষতি অনেক কম হয়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( খুলনা পূর্ব বিভাগ) মো. বেলায়েত হোসেন জানান, পূর্ব সুন্দরবনে প্রায় ৩৬ টি গাছ উপড়ে গিয়েছে যার মূল্য ১.৬১ লাখ টাকা আর বিশালাকৃতির কিছু গাছ বন্যায় ভেসে গিয়েছে যার মূল্য প্রায় ৫.৭১ লাখ টাকা এবং আরো ৮০টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যার মূল্য প্রায় ১.৬০ কোটি টাকা।
এর ভেতরে আছে ৮ টি পন্টুন, একটি ওয়াচ টওয়ার, ১৭ টি পুকুর, ১৮টি কাঠের জেটি, ১৬টি অফিস কাম বাসা ২১ টি সোলার প্যানেল এবং হাটার রাস্তা।
তিনি জানান অফিস কর্মকর্তারা আম্ফানের পর পূর্ব সুন্দরবন সরেজমিনে ঘুরে দেখেন।