November 25, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী

এফ এম হাফিজুল ইসলাম
আজ ১লা ফেব্রæয়ারি। মহান ভাষা আন্দোলনের মাসের প্রথমদিন। বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন একটি অধ্যায়ের সূচনা করে। আমাদের মুক্তি সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব অনস্বীকার্য। বাংলা ভাষার উপর পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ও মুসলিম লীগ চক্রের আক্রমণ ছিল মূলত বাঙালি জাতির আবহমান ঐতিহ্য সংস্কৃতি, হাজার বছরের ইতিহাস ও আত্মপরিচয়ের উপর আঘাত। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্তি হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ভৌগলিকভাবে পািস্তান রাষ্ট্রের জন্ম ছিল অভূতপূর্ব ও অবাস্তব। পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, ব্যবহার, ঐতিহ্য এবং অর্থনীতি ছিল পরস্পর হতে পৃথক। একমাত্র ধর্মই ছিল পাকিস্তানের জাতীয়তার ভিত্তি।
১৯৫১ সালের আদমশুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় ৯৭% এবং পূর্ববাংলার ৮০% ছিল মুসলমান। কিন্তু অধিকাংশ অধিবাসীর ধর্ম এক হলেও তাদের ভাষা ছিল ভিন্ন। সারা পাকিস্তানে ৫৬.৪০% মানুষ বাংলা ভাষাভাষি এবং মাত্র ৩.২৭% মানুষ উর্দু ভাষাভাষী। মোট ৭টি ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষা অর্ধেকের বেশি মানুষের মাতৃভাষা এবং অন্য ৬টি ভাষা অর্ধেকের কম কথা বলে সাহিত্য রচনা করে। অতএব যে কোনো বিচারে, যুক্তির মাপকাঠিতে এবং বাস্তব পরিস্থিতিতে একমাত্র বাংলা ভাষা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু সমাজ ও রাজনৈতিক মৌলিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানের শাসক মহল ধর্মের দোহাই দিয়ে বাংলা ভাষা ও বাঙালীর সংস্কৃতির উপর নগ্নভাবে আক্রমণ শুরু করে।
পকিস্তানের জন্মলগ্নের পর রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নটি স্বাধীনতার পর হতে রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করে। মূলত এই সংকটের জন্য দায়ী ছিল পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী। ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বাঙালি ছাত্র সমাজ, যুব স¤প্রদায়, বুদ্ধিজীবী ও আপামর জনসাধারণ এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা করে ইতিহাসে তা ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি এক অসা¤প্রদায়িক জাতীয় চরিত্র লাভ করে।- (তথ্যসূত্র: ড. মো: মাহবুবর রহমানের বাংলাদেশের ইতিহাস গ্রন্থ)।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *