আমার অবস্থান আগের মতোই আছে : মাহবুব তালুকদার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ভোটের পর গত ৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে’ তার বক্তব্য ঘিরে সৃষ্ট ‘বিভ্রান্তির’ অবসানে মঙ্গলবার এক লিখিত বক্তব্যে একথা জানান তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, তিনি সেদিন বলেছিলেন যে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছি‘, এর সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। দশম সংসদ নির্বাচন অধিকাংশ দল বর্জন করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছে সব দলের অংশগ্রহণে।
তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, এমন সুষ্ঠু ভোট আগে কখনও হয়নি। এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি নেতারা বলে আসছিলেন, ভোটের মাঠে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়নি।
ভোটের কয়েকদিন আগে মাহবুব তালুকদারও সেকথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন, যদিও তার সহকর্মীরা তার সঙ্গে ভিন্নমত জানান। ভোটের পর গত ৩ জানুয়ারি ইসিতে অনুষ্ঠানে মাহবুব তালুকদার বলেছিলেন, এই প্রথম একটা অংশীদারিত্বমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা জাতিকে উপহার দিতে পেরেছি।
আমি মনে করি, এই নির্বাচন বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটা ঐতিহ্য সৃষ্টি করবে। এই নির্বাচন ধরেই পরবর্তী ইতিহাসে যে নির্বাচনের ধারা, সেটা পরবর্তী সময়ে হয়ত ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকবে।
তার ওই বক্তব্য ধরে তার ‘অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে’ উলেখ করে খবর প্রকাশ হয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য সরবরাহ করেন মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, অনেক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করেছেন, আমি আমার অবস্থান পরিবর্তন করেছি কি না! এ সম্পর্কে বিভ্ররান্তির অবসান ঘটাতে বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। আমি বক্তব্যে বলেছি, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছি।
ইতোপূর্বে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখের বক্তব্যে আমি বলেছিলাম, ‘সব দল অংশগ্রহণ করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কি না এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কি না? নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই।
নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানে কোনো কথা বলেননি বলেও উলেখ করেন তিনি। কেমন নির্বাচন হয়েছে, সাংবাদিকদের এহেন প্রশ্নের জবাবে আমি পূর্বে বলেছি, নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, তাহলে এ প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন। এখনও আমি সেই কথাই বলি। আমার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে বিচার-বিশেষণ করা ঠিক হবে না বলে উলেখ করে তিনি বলেন, গত ৩ জানুয়ারির অনুষ্ঠানটি ছিল ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। কাউকে প্রশংসাসূচক কথা বলে ধন্যবাদ জানাতে হয় এবং সেটাই সৌজন্যের প্রকাশ। আমার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে বিচার-বিশেষণ করা ঠিক হবে না।